পুনম শাহরিয়ার ঋতু, গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর এলাকায় বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরের পর থেকে সরকার ঘোষিত নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছে মাহমুদ ডেনিস টেক্সটাইল, রহিম টেক্সটাইল, ছালেক স্পিনিং, করতোয়া স্পিনিংসহ ৭টি সুতা তৈরীর কারখানা শ্রমিকরা।
এ সময় উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় শ্রমিকরা ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড় অবরোধ করার চেষ্টা করলে শিল্প পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে তাদের মহাসড়ক থেকে সরিড়ে দেয়। ফের আধা ঘন্টা পর সফিপুর বাজার এলাকায় আন্দোলনরত শ্রমিকরা ভিক্ষোভ করে। এসময় মহাসড়কের দুই দিকে দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। অপরদিকে ঘটনার দিন সকালে উপজেলার রতনপুর এলাকায় নীট এশীয়ার কারখানার শ্রমিকরা সকাল ৮ থেকে কর্মবিরতী রেখে দুপুর পর্যন্ত এ গ্রেডে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করে।
শ্রমকিরা জানান, সরকার ঘোষিত ৪টি গ্রেডে বেতন বাড়ানোর কথা থাকলেও কারখানায় ২য় গ্রেডে বেতন বাড়িয়েছে ২০% ৩য় গ্রেডে বাড়িয়েছে ৮০% এদিকে গত ৭ জানুয়ারি নতুন কাঠামো অনুযায়ী বেতন পেলে শ্রমকিরা ১ গ্রেডে বেতন বাড়ানোর আবেদন জানান কতৃপক্ষের কাছে। পরে কারখানা কতৃপক্ষ বিষয়টি সমাধানের জন্য কিছুদিন সময় চাইলে ১৭ জানুয়ারি কারখানা কতৃপক্ষ শ্রমকিদের জানান বেতন যেমন ভাবে বাড়ানো হয়েছে তেমনি থাকবে। এতে চাকুরী করতে না চাইলে ইস্তফা দিয়ে চলে যেতে বলেন। তবে শ্রমিকরা বিষয়টি মেনে না নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে র্কমবিরতি রেখে আন্দোলন করে।
ঐ কারখানার ফিনিশিং অপারেটর রাজু মিয়া ও সুইং অপারেটর আয়নাল হোসেন জানান, যারা দশ বছর ধরে অপটারেটর হিসেবে আছে। তাদের বেতন যেমন নতুন অপারেটর এর বেতন তেমন সিনিয়র অপারেটরদের ১ গ্রেডে বেতন বাড়ানোর কথা বললে তারা না বাড়িয়ে চাকুরী ছেড়ে চলে যাবার কথা বলেন কারখানা কতৃপক্ষ। অথচ আজকে আন্দোলন চলাকালে আমাদের সাথে কারখানার কোন উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ কথা বলতে আসেনি।
অপরিদিকে ঢাকা টাঙ্গইল মহাসড়কে আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, সরকার সর্বনিম্ন ৭ হাজার টাকা থেকে সাড়ে বারো হাজার টাকা বেতন নির্ধারণ করলেও মালিক পক্ষ আগের বেতনেই সীমাবদ্ধ রেখেছে শ্রমিকদের। কারখানার মালিক গুলো কোন বেতন গ্রেড মানেনা।বেতন বৃদ্ধি করার দাবি করলে কারখানার মালিকপক্ষ শ্রমিকদের নির্যাতন করে এবং চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেয়।
শ্রমিকরা আরো জানান, আমরা সকল শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলনে নেমেছি। দাবি পূরণ না হলে আবারোও মহাসড়ক অবরোধ করা হবে।
যমুনা স্পিনিং কারখানার অপারেটর জাকিয়া খাতুন জানান, কারখানার মালিরা আমাদের মানুষ মনে করে না। বেতন বৃদ্ধির কথা বললে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেয়। ৭০০০ টাকা বেতনে আমাদের সংসার চলেনা, বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দিগুণ দাম যা আমাদের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে।
মালেক স্পিনিং মিলের লাইনম্যান হোসনেআরা জানান, স্পিনিং মিল গুলোর মালিকপক্ষ আমাদের বেতন বাড়ানো তো দুরের কথা সরকার ১২ হাজার ৫০০ টাকা বেতন বৃদ্ধির কথা বললেও মালিকপক্ষ বেতন বৃদ্ধি করবে না বলে জানিয়েছেন। তাছাড়া বেতন বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করলে কারখানা বন্ধ করার হুমকি দেয় কারখানা কতৃপক্ষ।
কালিয়াকৈর জোনের শিল্প পুলিশের ওসি নিতাই চন্দ্র সরকার জানান, শ্রমিকরা সরকার ঘোষিত নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন করেছে। পরে আন্দোলনের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।
তিন আরো জানান, শ্রমিকদের সাথে কোন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি শান্তি পূর্ণভাবেই শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সড়িয়ে যানর চলাচল স্বাভাবিক করা হয় ।