গুপ্তধনের লোভ দেখিয়ে জামালপুর থেকে মা-মেয়েকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ডেকে এনে ধর্ষণের দায়ে তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-২ বিচারক। একই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া মামলার অপর দুই অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-২ বিচারক মো: আব্দুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত ও খালাস পাওয়া অভিযুক্তরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার গোসাইপুর গ্রামের মমতাজ উদ্দিনের ছেলে বেলাল হোসেন, একই গ্রামের বদিউজ্জামানের ছেলে এমদাদুল হক ও শ্যামপুর পারবর্তীপুর গ্রামের দুদু মিয়ার ছেলে খাজা মিয়া। খালাস পাওয়া আজিজুল ইসলাম গোবিন্দগঞ্জের সাতগাছি হাতিয়াদহ গ্রামের আবদুল কাদেরের ছেলে ও আসাদুল ইসলাম সুন্দাইল গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, জ্বিনের বাদশা পরিচয়ে মা ও মেয়ের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে দণ্ডপ্রাপ্তরা। তারা বিভিন্ন সময় বিকাশের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে মা ও মেয়েকে ২০১৮ সালের ১২ মে গোবিন্দগঞ্জে ডেকে এনে তাদের কাছে থাকা স্বর্ণালংকার ও নগদ ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয়। পরে গভীর রাতে করতোয়া নদীর চরে নিয়ে গিয়ে মা ও মেয়েকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায় দণ্ডপ্রাপ্তরা। ওই ঘটনার পর গোবিন্দগঞ্জ থানায় এসে ধর্ষণের শিকার মা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৬-৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্ত শেষে ৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দেয় পুলিশ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল (পিপি) মো: মহিবুল হক সরকার মোহন জানান, সাড়ে তিন বছর আদালতে মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্যে দিয়ে বিচার কাজ শেষ হয়। আদালতে মা ও মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনাটি প্রমাণিত হওয়ায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অপর দুই আসামিকে খালাস দেন বিচারক। সেই সঙ্গে ভুক্তভোগীকে ক্ষতি পূরণ দিতে দণ্ড প্রাপ্তদের এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।
তবে আদালতের এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী মো: সিদ্দিকুর রহমান রিপু। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলের কথা জানান তিনি।
এদিকে, রায় ঘোষণার পর দণ্ড প্রাপ্ত তিন আসামিকে আদালত থেকে পুলিশি পাহাড়ায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। দণ্ড প্রাপ্তদের মধ্যে বেলাল ও এমদাদুল গ্রেফতারের পর থেকেই কারাগারে ছিলেন। খাজা এবং খালাসপ্রাপ্ত আজিজুল ও আসাদুল কারাগার থেকে জামিন ছিলেন।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts sent to your email.