গভীর রাতে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে ঘুমন্ত মুসুল্লিদের হামলার প্রতিবাদে কালিয়াকৈরে বিক্ষোভ সমাবেশ
টঙ্গির ইজতেমা ময়দানে গভীর রাতে ঘুমন্ত মুসুল্লিদের উপর সাদপন্থী সর্মথক কতৃক হামলা ও হত্যাকারীদের দ্রæত গ্রেফতার ,বিচার ও সাদপন্থীদের কার্যক্রম আজীবন নিষিদ্ধের দাবিতে শ্রক্রবার দুপুরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে উপজেলার সর্বস্থরের তৌহিদী জনতা,তাবলীগের সাথী উলামায়ে কেরামগন ।
উপজেলা উলামা পরিষদের সভাপতি মুফতি এমদাদ হকের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন উপজেলা উলামা পরিষদের সাধারন সম্পাদক মাওলানা আমিনুল ইসলাম আমিনি,সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নুরুজ্জামান,মুফতি মুফতি আব্দুর রউফ ইউসুফি ,আলহাজ আজহারুল ইসলাম,মাওলানা কাজী আব্দুল্লাহ আল মাসুম,মাওলানা নজরুল ইসলাম,মাওলানা সালমান দেওয়ান প্রমুখ ।
এসময় বক্তারা বলেন গত ১৮ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে নির্মম ঘটনা ঘটেছে। সাদপন্থী এতায়াতী নামধারী কিছু সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন দাওয়াত ও তাবলীগের অন্তত ৪ জন সাথী। আহত হল অসংখ্য অগণিত মানুষ। ভারতের দিল্লীর নিজামউদ্দিন মারকাজের মাওলানা সা’দ কান্ধলবি একজন বিতর্কিত আলেম।
বহু বিষয়ে তার বিতর্কিত বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের অধিকাংশ আলেম তাকে গোমরাহ ও বিচ্যুত যোষণা করেছেন। দারুল উলুম দেওবন্দ সহ উপমহাদেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরামের বারবার সতর্ক করা সত্বেও তিনি তার গোমরাহী থেকে ফিরে আসেননি। তারই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের উলামায়ে কেরাম তার নেতৃত্বের ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেন।
দাওয়াত ও তাবলীগের অধিকাংশ সার্থী উলামায়ে কেরামের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী সা’ দ সাহেবের বিচ্যুতির ব্যাপারে সতর্ক হন। কিন্তু কতিপয় অন্ধ অনুসারী এবং উগ্ন লোকেরা হক্কানী ওলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধাচারণ করে সা’দ সাহেবের পক্ষাবলম্বন করে।
এছাড়াও ২০১৮ সালের ১ লা ডিসেম্বর টঙ্গীর ময়দানে পাহারার উদ্দেশ্যে অবস্থানরত নিরীহ ছাত্রদের উপর সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়েছিল সা’দপন্থীরা। এসময় শত শত ছাত্র জনতা তাদের হাতে রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল। এরপর থেকে সা’দ সাহেবের বাংলাদেশে আসা বন্ধ হয়ে যায়। পরে উলামায়ে কেরাম তাদের ক্ষমা ও উদারতার অনুপম দৃষ্টান্ত পেশ করে এবং মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তর স্বার্থে নমনীয় আচরণ করেছিলেন। কোনো প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
এদেশের মানুষ জানে ।বক্তারা আরো বলেন স্বৈরাচারের আমলে সা’দপন্থীদের লিডার ইঞ্জিনিয়ার ওয়াসিফ, ইরতেজা হাসান সহ অনেকেই সরকারের নির্লভ দালালিতে ব্যস্ত ছিল। কিক্ত স্বৈরাচারের পতনের পর তারা নিজেদের রূপ পরিবর্তন করে বিভিন্ন মহলে তদবির করে দেশে বিশৃংখল এবং অরাজকর পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
নানা ঘটনার পর সরকারের সর্বোচ্চ মহলের সাথে উভয় পক্ষের মুরুব্বীদের বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত হয় যে বিগত বছরগুলোর আর ন্যায় এ বছরও শুরাগন্দ্বী সাথীগন আগামী ৩১ শে জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রæয়ারী প্রথম ইজতেমা করবেন। আর সা’দপন্থীরা দ্বিতীয় ইজতেমা করবে। এবং সা’দ সাহেব বাংলাদেশে আসতে পারবেন না।
সে অনুযায়ী সাথীগন যথারীতি টঙ্গী ময়দানে মাঠ প্রস্তুতকরণ সহ অন্যান্য কাজ আসাম দিচ্ছিলেন। কিন্তু বিগত ১৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে সা’ দপন্থীরা বিভিন্ন মিথ্যা ও ধোঁকাবাজির আশ্রয় নিয়ে হীন উদ্দেশ্যে সারাদেশ থেকে হাজার হাজার লোক জড়ো করতে থাকে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় দুইজন সমন্বয়েকের সাথে তারা বৈঠক করে।
অতঃপর তাদের নির্দেশনা ও অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে নিরীহ সাধীদের ওপর হামলা অতর্কিত হামলা চালায়। এ হামলা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং পূর্বপরিকল্পিত। ফ্যাসিবাদ ও ভারতের দোসর ওয়াসিফের সরাসরি নির্দেশে এই হত্যাযজ্ঞ হয়েছে। প্রমাণস্বরূপ তার দেয়া চিঠি ও তার ভারতের দালাল হওয়ার নখিগুলো আমাদের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। আমাদের দেশের ওলামায়ে কেরাম, বুদ্ধিজীবী মহল, সমন্বয়ক ও সর্বোচ্চ মহল এই সাদিয়ানী গ্রুপকে একটি সন্ত্রাসী দল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
এসময় বক্তারা এ হত্যাযজ্ঞের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অতিদ্রæত বিচার আওতায় এনে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করন । ও আহত নিহতদের যথাযথ ক্ষতিপূরন সহ ৭ দফা দাবি জানান বিক্ষোভ কারীরা ।