ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন ও ঈদ বোনাসসহ ৯ দফা দাবিতে গাজীপুরের কালিযাকৈর উপজেলার মৌচাক ভান্নারা বনফুল মার্কেট এলাকায় রোববার সকালে বিক্ষোভ করেছে দাইয়ু সোয়েটার কারখানার শ্রমিকরা। এসময় বিক্ষোভরত শ্রমিকদের উপর স্থানীয় যুবদল নেতার নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১০ জন শ্রমিক আহত হয়েছে। এতে তিন শ্রমিকের অবস্থা গুরুতর আশঙ্কা জনক অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে ।
কারখানার শ্রমিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ভান্নারা বনফুল মার্কেট এলাকার দাইয়ু বাংলাদেশ লিমিটেড নামের একটি সোয়েটার কারখানা রয়েছে। ওই কারখানার শ্রমিকরা ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন, ঈদ বোনাস, টিফিন বিল বৃদ্ধি, বাৎসরিক ছুটির টাকা, হাজিরা বোনাস বৃদ্ধি, মাতৃত্বকালীন ছুটিতে গেলে শ্রম আইন অনুযায়ী টাকা দেয়াসহ ৯ দফা দাবিতে রোববার সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করে।
ওই সময় শ্রমিকরা কারখানায় ব্যাপক ভাংচুর করে। এক পর্যায়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সদস্য মো. মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে দুই শতাধীক নেতা-কর্মী নিয়ে শ্রমিকদের উপর হামলা করে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। আহতরা স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এসময়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ ও শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রন করে। পরে উত্তেজিত শ্রমিকরা পুলিশ সদস্যদের উপেক্ষা করে কারখানার পাশে থানা ওই যুবদল নেতার একটি মুদি দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করে। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে বলে যুবদল নেতার দাবি ।
কারখানার শ্রমিকরা জানায়, তারা গত দুইদিন ধরে ৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করছি। এরমধ্যে রোববার সকালে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের শ্রমিকদের উপর হামলা করে। এতে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে আমাদের ১০ জন শ্রমিক আহত হয়েছে।
জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সদস্য মো. মনিরুজ্জামান বলেন, কারখানার মালিকের ডাকে সারা দিয়ে আমরা স্থানীয়রা সকালে কারখানায় গিয়েছিলাম তবে আমরা শ্রমিকদের উপর কোনো হামলা চালায়নি। স্থানীয় কিছু লোক যারা আমাদের বিরুদ্ধে কাজ করে তারা মিথ্য কথা প্রচার করে শ্রমিকদের উত্তেজিত করে তুলে। শ্রমিকরা তার দোকানে হামলা চালায় এবং ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।
কালিয়াকৈর উপজেলাধীন মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আব্দুস সেলিম জানান, কারখানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি আগের থেকে স্বাভাবিক রয়েছে। শ্রমিকদের দাবিগুলো এলোমেলো।
তাদের সঙ্গে ও মালিকপক্ষের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কথা বলে শ্রমকিদের শান্ত করে বাসায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। শ্রমকিদের দাবি বাস্তবায়নে কারখানা কতৃপক্ষের সাথে মিটিং চলছে।