কালিয়াকৈরে বিএনপির কমিটি নিয়ে উত্তেজনা: দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ১০
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় নবগঠিত বিএনপি কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে নবগঠিত বিএনপির উপজেলা ও পৌর আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বিএনপির আরেকটি পক্ষ। এসময় দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোববার সকালে উপজেলার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সাহেব বাজার বাইপাস এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, গত ১৪ মে কালিয়াকৈর উপজেলা, পৌরসভাসহ কমিটি বাতিল করে গাজীপুর জেলা বিএনপি। এরপর তৃণমূল নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি।
এদিকে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলা ও পৌরসহ দুটি বিএনপির আহ্বায়ক পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক করা হয় মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম সিকদারকে, সদস্যসচিব করা হয়েছে এম আনোয়ার হোসেনকে। কালিয়াকৈর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে মামুদ সরকার ও সদস্যসচিব করা হয়েছে মহসিন উজ্জামানকে।
তবে পৌর বিএনপির কমিটি নিয়ে অসন্তোষ না থাকলেও, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি মেনে নিচ্ছেন না উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ ও তার সমর্থকেরা। তারা আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে গতকাল রাতেই বিক্ষোভ মিছিল করেন। একই দাবিতে রোববার সকাল সাড়ে দশটার পর থেকে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী পারভেজ আহমেদের পক্ষ নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এ সময় নতুন কমিটির পক্ষ থেকে আরেকটি মিছিল বের হয়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন।
খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই পক্ষকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। তবে এ ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকায় জোরদার করা হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ বলেন, “গতকাল একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিতে যাঁদের রাখা হয়েছে, তাঁরা সবাই একসময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে সখ্যতা রেখে চলাফেরা করেছেন। যার কারণে ওই কমিটি বাতিল করার দাবিতে আমাদের নেতা-কর্মীরা সকালে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এ সময় চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকীর (গাজীপুর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব) লোকজন আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালান। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা ওই পকেট কমিটি বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।”
গাজীপুর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, “যাঁদের নতুন কমিটিতে রাখা হয়েছে তাঁরা সবাই ক্লিন ইমেজের। তাঁদের ব্যাপারে এলাকার মানুষের কোনো অভিযোগ নেই। সকালে নতুন কমিটি আনন্দমিছিল বের করলে পদবঞ্চিত হয়ে একটি পক্ষ তাঁদের ওপর হামলা করেছে।” তিনি দলের নেতা-কর্মীকে এলাকায় শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বলেন, “থানা-পুলিশ ও সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। দুপুর ১২টা থেকে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”