কালিয়াকৈরগাজীপুর

চাঞ্চল্যকর গৃহবধু হত্যার দুইমাস পর স্বামী মাসুদ রানা গ্রেফতার

পুনম শাহরীয়ার ঋতু,জেলা প্রতিনিধি গাজীপুর:
গাজীপুরের কালিযাকৈরে চাঞ্চল্যকর গৃহবধু হাফিজা আক্তার(২৮) শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার গটনায় দুই মাস পর ঘাতক স্বামী মাসুদ রানা কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১ এর একটি অভিযানিক দল। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি হলেন জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার মৃত অহেজ উদ্দিনের ছেলে।

গতকাল ২৬ আগষ্ট ঢাকার আশুলিয়া থানার কোল্ডবাগ এলাকা থেকে তথ্য প্রযুক্তি মাধ্যমে তাকে আটক করে র‌্যাব -১ এর আগেও বিভিন্ন স্থানে একাদিক মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে এতোদিন ঐ মামলা গুলোতে জামিনে ছিলেন তিনি। নিহত হাফিজা আক্তার হলেন কালিয়াকৈর উপজেলার র্পৃব মৌচাক এলাকার হাসেম সিকদারের মেয়ে।

উল্লেখ্য গ্রেফতারকৃত আসামী মাসুদ রানা আনুমানিক ০৫(পাঁচ) বছর পূর্বে ভিকটিম হাফিজা আক্তারকে পারিবারিকভাবে বিবাহ করে। আসামী মাসুদ রানার পূর্বে আরও একজন স্ত্রী ছিল সে ঘরে তিন সন্তান আছে। যা গোপন করে ভিকটিম হাফিজা আক্তারকে বিবাহ করে। উক্ত বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বিবাহের পর থেকে প্রতিনিয়ত পারিবারিক দ্বন্ধ ছিল। গত ২৭ জুন তাদের মধ্যে উক্ত বিষয়ে পুনরায় ঝগড়া হয় এ ঘটনার দুইদিন পর আসামী মাসুদ রানা নিহত হাফিজার ছোট ভাই সাব্বিরকে ফোন করে জানায় যে তার বোন অসুস্থ দ্রুত আসামীর ভাড়া বাসায় যেতে বলে।

ভিকটিমের ছোট ভাই সাব্বির তার ভগ্ধসঢ় পতির বাসায় গিয়ে তার বোনকে ঘরের ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহম্মদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহতের পিতা মোঃ হাসেম সিকদার বাদি হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করে।তবে নিহতের পরিবারের দাবি তাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

এদিকে পুলিশ প্রথমে বিষয়টি হত্যাকান্ড কিনা তা অপারগতা প্রকাশ করলেও মেডিকেলের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এ দেখা যায় এটা শারীরিকভাবে আঘাত ও শ্বাসরুদ্ধ জনিত হত্যা কান্ড। এ ঘটনার পর থেকেই ঘাতক স্বামী মাসুদ রানা গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে পলাতক চিলেন। এই ঘটনা নিয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় ব্যপক নিউজ প্রচারিত হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে এই হত্যাকান্ডের আসামী গ্রেফতারের জন্য র‌্যাব-১, সিপিএসসি এর একটি আভিযানিক দল ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।পরে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে জানতে পারে ঢাকার আশুলিয়া থানাধীন কোল্ডবাগ এলাকায় আতগোপনে আছে। এমন গোপন সংবাদের ভিক্তিতে র‌্যাব ১ এর একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।

মাসুদ রানা পেষায় বিদেশে লোক পাটানোর কাজ করতেন । এর আগেও বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে একাদিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতার হওয়ার পর র‌্যাবের কাছে হত্যার কথা শিকার করেন আসামী মাসুদ রানা। এদিকে র‌্যাব -১ সূত্র জানায় গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে,জনৈকা বুলবুলি নামের তার একজন স্ত্রী আছে, মাসুদ রানার নিজ বাড়ী জামালপুর বসবাস করেন। উক্ত সংসারে তার ০২(দুই) ছেলে ও ০১(এক) মেয়ে রয়েছে। সে প্রথম স্ত্রী বুলবুলি এর বিবাহের কথা গোপন করে ০৫(পাঁচ) বছর পূর্বে ভিকটিম হাফিজা আক্তার কে ২য় বিবাহ করে, মৌচাক কামরাঙ্গীচারা গ্রামের সেলিমের ভাড়া বাসায় বসবাস করে। এই বিষয় নিয়ে ভিকটিমের সাথে তার প্রায় ঝগড়া হত। ২৮ জুন রাতের যে কোন সময় হাফিজা আক্তার কে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করার পর হত্যাকান্ডকে আড়াল করার উদ্দেশ্যে ভিকটিমের লাশ গ্রেফতারকৃত আসামীসহ আরো অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন মিলে লাশ ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখে এবং ঘরের দরজা তালা বন্ধ করে সকলে আতগোপনে চলে যায়। তাছাড়া গ্রেফতারকৃত আসামী ঘটনার পর থেকে আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে মর্মে জানা যায়।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker