সন্দেহের বশে ১১ বছরের সন্তানকে ভয়ংকর শাস্তি দিলেন বাবা। টাকা চুরির অভিযোগে ছোট্ট ছেলেকে ছাদে নিয়ে উল্টো ঝুলিয়ে রাখেন তিনি। অবুঝ শিশুর অঝোর কান্নায়ও মন গলেনি পাষণ্ড বাবার। অভিযোগ উঠেছে, উন্মত্ত স্বামীর হাত থেকে শিশুপুত্রকে বাঁচানোর বদলে উল্টো উৎসাহ দিয়েছেন সৎমা। মধ্যযুগীয় বর্বরতার এ ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গোপালনগর থানার দীঘারী গ্রামে।
জানা গেছে, বিশ্বজিৎ সরকার পেশায় চাষি। তার ১১ বছরের সন্তান বিশাল সরকার বাড়ি থেকে ৫০০ রুপি চুরি করেছে বলে অভিযোগ। বিশ্বজিৎ ও তার স্ত্রী মিলে ঘরে-বাইরে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও সেই হারানো টাকা না পেলে সন্দেহ গিয়ে পড়ে ছেলে বিশালের ওপর।
সৎমা ছেলেটির বাবাকে বলেন, হারানো টাকা বিশালই নিয়েছে। তা শুনে বাবা বিশালকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। হারানো ৫০০ রুপি চুরির অভিযোগ অস্বীকার করতেই ছোট্ট ছেলেটির ওপর শাসনের নামে নির্মম-বর্বর অত্যাচার শুরু করেন বিশ্বজিৎ সরকার।
শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে একতলা ভবনের ছাদে নিয়ে বিশালের পা ধরে নিচের দিকে ঝুলিয়ে দেন বিশ্বজিৎ। ছেলে বারবার কাকুতি-মিনতি করলেও তা কানে তোলেননি পাষণ্ড বাবা।
এই খবর স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তারা গোপালনগর থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত বাবাকে আটক করে পুলিশ এবং নির্যাতিত শিশুকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
বিশাল সরকারের সৎমা সুনিতা সরকার বলেন, ঘর থেকে ৫০০ রুপি চুরি হয়েছে। সেটি খুঁজে না পেয়ে বিশালকে জিজ্ঞাসা করা হয়। কিন্তু সে চুরির কথা অস্বীকার করায় ওর বাবা এই কাজটি করেন।
সুনিতার দাবি, বিশাল মাঝেমধ্যেই টাকা চুরি করতো। সে কারণে তার বাবা একটু-আধটু মারও দিতো। তিনি বলেন, বিশালকে মাঝেমধ্যে অল্প করে টাকা দেওয়া হতো। তারপরেও কীসের জন্য চুরি করতো সেটি আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। রাগের মাথায় ওর বাবা হয়তো এই কাজটি করে ফেলেছে।
তিনি আরও বলেন, আমি বিশালকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি। গ্রামের লোক তা দেখেছে। তাছাড়া সৎমা হলেও আমি তাকে কতটা ভালোবাসি সেটি মানুষজন ভালো করেই জানে।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.