ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি: মার্কিন মধ্যস্থতায় উত্তেজনার অবসান
কাশ্মীর হামলার জেরে সামরিক উত্তেজনার পর অবশেষে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি ঘোষণা
দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তান চলমান সামরিক উত্তেজনার পর অবশেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার বিকেল ৫টা থেকে এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প Truth Social-এ এক ঘোষণায় বলেন, “একটি দীর্ঘ রাতের আলোচনার পর, আমি ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত যে ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।” তিনি দুই দেশের নেতাদের “সাধারণ বুদ্ধি ও মহান বুদ্ধিমত্তা”র জন্য প্রশংসাও করেন।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, “পাকিস্তান সবসময়ই অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তার পক্ষে, তবে তা হবে নিজেদের সার্বভৌমত্ব বজায় রেখে।” অন্যদিকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর বলেন, “ভারত সন্ত্রাসবাদবিরোধী আপসহীন অবস্থানে থাকবে, তবে শান্তির প্রয়াসকেও সম্মান জানায়।”
গত মাসে ভারতের কাশ্মীর অঞ্চলের পাহেলগামে হিন্দু তীর্থযাত্রীদের ওপর একটি ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ভারত দাবি করে, হামলার পেছনে পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গিগোষ্ঠী রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারত পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বিমান হামলা চালায় এবং পাকিস্তানও পাল্টা সামরিক প্রতিক্রিয়ায় ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস’ শুরু করে।
যুদ্ধবিরতির পর পাকিস্তান তার আকাশসীমা পুনরায় খুলে দিয়েছে এবং দুই দেশই সবধরনের সামরিক কার্যক্রম স্থগিত রেখেছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু “ইন্দাস জলচুক্তি” এখনো স্থগিত রয়েছে, যা ভবিষ্যতের দ্বন্দ্বের আশঙ্কা রেখে যাচ্ছে।
জি৭ দেশসহ বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে এই যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানানো হয়েছে। চীন, সৌদি আরব ও যুক্তরাজ্য উভয় দেশকে সংযম বজায় রাখতে আহ্বান জানিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই যুদ্ধবিরতি যদি টেকে, তবে দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তির এক নতুন অধ্যায় শুরু হতে পারে।