আন্তর্জাতিক

শত্রুতা ভুলে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ঐক্যের ডাক ইরান-সৌদি আরবের!

মধ্যপ্রাচ্যে যখন যুদ্ধের গন্ধ স্পষ্ট, তখন এক নতুন কূটনৈতিক বার্তা দিয়ে চমকে দিল ইরান ও সৌদি আরব। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই পারস্পরিক সহযোগিতা ও শান্তির আহ্বান জানিয়েছে এই দুই প্রভাবশালী মুসলিম দেশ।

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সম্প্রতি এক ফোনালাপে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে আঞ্চলিক পরিস্থিতি, মুসলিম বিশ্বের ঐক্য এবং ফিলিস্তিন সংকট নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেন। উভয় নেতা একে অপরকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি বর্তমান ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়েও খোলামেলা মতবিনিময় করেন।

এই আলোচনার কেন্দ্রে ছিল শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ঐক্যের বার্তা। প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান স্পষ্ট জানিয়েছেন, “ইরান কোনো যুদ্ধ চায় না, তবে আত্মরক্ষার জন্য আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুত।” একই সঙ্গে তিনি জোর দিয়ে বলেন, “পারস্পরিক স্বার্থ ও সম্মানের ভিত্তিতে যেকোনো সমস্যা সমাধানে আমরা সংলাপের পথে আছি।”

যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ভারত মহাসাগরে তার সামরিক উপস্থিতি জোরদার করছে, সেখানে ইরান বলছে, তারা যুদ্ধ শুরু করবে না, তবে হামলার মুখে আত্মরক্ষার জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। বিশেষ করে তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি ঘিরে পশ্চিমা উদ্বেগের মধ্যে ইরান তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে—শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে এই কর্মসূচি পরিচালিত হলেও, আত্মরক্ষায় তারা আপসহীন।

এই প্রেক্ষাপটে সৌদি আরবের সঙ্গে ইরানের ঘনিষ্ঠতা এবং পারস্পরিক সহযোগিতার বার্তা মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুবরাজ সালমান এই আলোচনায় ইরানের শান্তির বার্তাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, সৌদি আরবও এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত। তিনি প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানকে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ঐক্যের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং রিয়াদ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

উভয় দেশের নেতারা ফিলিস্তিন এবং গাজা অঞ্চলে চলমান দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে যৌথ পদক্ষেপের ওপর গুরুত্ব দেন। তারা বিশ্বাস করেন, মুসলিম দেশগুলো একসঙ্গে কাজ করলে মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা সম্ভব।

এই আলোচনার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ও হুমকি সত্ত্বেও ইরান ও সৌদি আরব এখন ঐক্য ও শান্তির নতুন বার্তা দিচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে এই কূটনৈতিক উষ্ণতা এক নতুন আঞ্চলিক সমীকরণ গড়ে তুলতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় এক বার্তা। শান্তিপূর্ণ সমাধানই এখন তেহরান-রিয়াদের মূল লক্ষ্য— এবং এই ঐক্যের ডাক মধ্যপ্রাচ্যে নতুন শান্তি আনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker