শেরপুরে প্রায় ৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আত্মগোপনে থাকা বাবর অ্যান্ড কোং (প্রা.) লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী কামরুজ্জামান সুজন ও তার মা কামরুন নাহার হাসেমকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
বুধবার (২৪ আগস্ট) তাদেরকে শেরপুর সদর থানায় সোপর্দ করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) রাজধানী ঢাকার রাজউক উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রজেক্টে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব-১।
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সুজন ও তার মায়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৫০টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি মামলায় তারা বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, শেরপুর শহরের নারায়ণপুর এলাকাস্থ বাবর অ্যান্ড কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আবুল হাসেম অগ্রিম ইট বিক্রি করে এবং ধান ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বাকিতে ধান কিনে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন।
২০১৮ সালে আবুল হাসেমের মৃত্যু হলে তাঁর জানাজায় জ্যেষ্ঠ পুত্র কামরুজ্জামান সুজন পিতার ঋণ পরিশোধ এবং ব্যবসা পরিচালনা করে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন। এতে আশান্বিত হয়ে অনেকে পুনরায় অগ্রিম ইট কেনা ও বাকিতে ধান বিক্রি শুরু করেন। কিন্তু মালিকপক্ষ পরস্পর যোগসাজশে অগ্রিম ইট বিক্রির ৪৫ কোটি টাকা ও চাল বিক্রির পাঁচ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজেদের কাছে রাখেন।
এক পর্যায়ে রাতের আঁধারে সুজনসহ তার পরিবারের লোকজন ঢাকায় পালিয়ে যান এবং পাওনাদারদের টাকা ফেরত দিকে গড়িমসি শুরু করেন। পরবর্তীতে অনেক পাওনাদার টাকা না পেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। এসব মামলার মধ্যে তিনটিতে বিভিন্ন মেয়াদে তাদের কারাদণ্ড হয়। বাকী ৪৭টি মামলার কয়েকটি তদন্তাধীন ও কয়েকটি বিচারাধীন রয়েছে।
এদিকে, পাওনা টাকা না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন তিন শতাধিক পাওনাদার। তাদের অনেকেই জমি-জমা বিক্রি করে, কেউবা পেনশনের টাকা বাবর অ্যান্ড কোং-এ রেখেছিলেন বলে জানিয়েছেন। সুজন ঢাকায় পালিয়ে আসার পর সাধারণ মানুষ তাকে গ্রেপ্তার ও টাকা ফেরতের দাবিতে মানববন্ধন করাসহ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেন।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts sent to your email.