নোয়াখালীতে চুরির পর এক গৃহবধূকে (৩৫) ধর্ষণ করে হত্যার ঘটনায় দুই চোরকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়োন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরা, চোরাইকৃত এক জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, এক জোড়া রুপার পায়ের নুপুর ও ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করে।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নোয়াখালী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের চর নলুয়া গ্রামের মো. জাহাঙ্গীর আলম (২৮) ও একই গ্রামের মো. নিজাম উদ্দিন শান্ত (২৫)।
পুলিশ সুপার জানান, নিহত গৃহবধূর স্বামী (৩৫) কবিরহাট উপজেলার রামেরশ্বরপুর গ্রামের একটি নার্সারিতে চাকরি করেন। সেই সুবাদে তিনি সেখানে থাকেন। গত বছরের ১১ ডিসেম্বর নিহত গৃহবধূ রাতে বাড়িতে একা ঘুমিয়ে ছিলেন। আসামিরা পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে তার বসত ঘরের সিঁধ কেটে প্রবেশ করে।
দুই আসামি পেশায় রিকশা চালক এবং পরস্পরের বন্ধু ছিলেন।
আসামি নিজাম উদ্দিন শান্তর বাড়ি এবং ভিকটিম নাজমুন নাহারের বাড়ি কাছাকাছি। ভিকটিম বিষয়টি টের পেলে তারা ছোরার ভয় দেখিয়ে ভিকটিমকে কাবু করে এবং ঘরের ভিতরে তল্লাশি করে নিহতের মোবাইল ফোন, স্বর্ণের এক জোড়া কানের দুল, একটি নাকের ফুল এবং রুপার এক জোড়া পায়ের নুপুর কেড়ে নেয়।
একপর্যায়ে জাহাঙ্গীর ভিকটিমকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং আসামি শান্ত নিহত গৃহবধূর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এসময় গৃহবধূ তাদেরকে চিনে ফেলায় আসামিরা ভিকটিমের হাত-পা বেধে গলায় ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
পরের দিন সকাল ৭টার দিকে স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় ভিকটিমকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় নিহতের স্বামী সুধারাম মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে গত ১৯ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় গৃহবধূ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়।
মামলাটি গত ৩০ ডিসেম্বর জেলা গোয়েন্দা শাখাতে তদন্তের জন্য হস্তান্তর হওয়ার পর (ডিবি) টিম চাঞ্চল্যকর রহস্যজনক হত্যার বিষয়টি উদঘাটনে মাঠে নামে।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুটি বিদেশি পিস্তলসহ যুবক গ্রেপ্তার
সোমবার ১৩ ফেব্রুয়ারি চাঞ্চল্যকর ক্লু-লেস হত্যা মামলার আসামিদের তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নোয়াখালী ও কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আসামিদের বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে, দুই আসামি দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এসএম মোসলেহ্ উদ্দিনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।