৭১ এর পূর্ব হতে অদ্যবধি স্বচ্ছ রাজনীতির এক পুরোধা ব্যক্তি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম।বিবিসি’র জরিপেও জীবিত বাঙালি রাজনীতিকদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ তিনি।যার দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে সুনাম বৈ অস্বচ্ছতা নেই।তিনি যেমন দেশের আপামর জনতার নিরঙ্কুশ ভালোবাসা অর্জন করেছেন তেমনি বিরোধিদল সহ প্রায় সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দেরও আস্থার জায়গাটুকু দখলে নিয়েছেন,অদ্যবধি মুকুটহীন সম্রাট রূপে বাংলার মানুষের মনরাজ্য শাসন করছেন ভালোবাসার স্বমহিমায়।
তিনি সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নিজের ও নিজ প্রতিষ্ঠিত দলের জন্য কখনও কোনো ফায়দা লুটার বিকৃত রাজনৈতিক নেশায় মত্ত হননি,বরঞ্চ সাধারণের কাতারে থেকে সর্বদা জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় বরাবরি ঘাম ঝরিয়েছেন।নানা সময়ে সরকারের লোভনীয় প্রস্তাব উপেক্ষা করেছেন জনসাধারণ হতে দূরে সরে যাওয়ার ভয়ে।তাইতো তিনি যেমন আপামর জনতার ভরসাস্থল তেমনি সর্ব দলীয় নেতৃবৃন্দের যোগ্য পিতৃব্য,যার কাছে দল মত নির্বিশেষে সবাই সমান আশ্রয় ও সুযোগ পেয়েছে।
একটু পেছনে ফিরে যেতে চাই। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে “চার দলীয় ঐক্যজোট” সরকার গঠন করলে আওয়ামীলীগ প্রধান বিরোধী দল হয়।কিন্তু আওয়ামীলীগ দলীয় স্বার্থে সংসদ বর্জন করলে বঙ্গবীর একা প্রধান বিরোধী দল হিসেবে সরকারের নানা ত্রুটির সমালোচনা করতে থাকেন ও সরকারের নীতি নির্ধারণে বিরোধী দল হিসেবে পূর্ণ হস্তক্ষেপ করেন।বলা হয়ে থাকে বিরোধী দলই সরকারের চালক,বিরোধী দল না থাকলে সরকার স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠে।তাই বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী জাতীয় স্বার্থে একাই বিরোধী দলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে জনগণের আস্থাভাজনে সক্ষম হন। যদিও সরকারের সমতালে চললে নিজ দল ও আত্মস্বার্থ হাসিলে যথেষ্ট ফায়দা লুটতে পারতেন,কিন্তু তিনি তা করেননি।
#ওয়ান ইলেভেনে তত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হলে দেশে দূর্নীতিমুক্ত অভিযান পরিচালিত হয়।দেশের শীর্ষ দুটি রাজনৈতিক দলের দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া সহ অসংখ্য নেতা-কর্মী গ্রেফতার হন,ক্রস-ফায়ার প্রতিদিনকার বুলেটিন হতে থাকে।দেশের রাজনৈতিক পট পুরোটাই পরিবর্তিত হয়।দেশের শীর্ষ রাজনীতিকের প্রায় সবাই কারারুদ্ধ হন।বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম স্বদর্পে তখনও মুক্তভাবে সরকারের কড়া সমালোচনা করে যাচ্ছিলেন।একমাত্র তিনি ছাড়া সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খোলার মতো কেউ ছিলনা।সকল নেতৃবৃন্দ যখন দিশেহারা,মধ্য সমুদ্রে ফুটো হয়ে যাওয়া জাহাজের ন্যায় যখন সবার একটি আশ্রয়স্থল দরকার ঠিক সেই মুহুর্তে তাদের সামনে অবতাররূপে আশ্রয় নিয়ে অবতারণ করেন বাংলার বীর বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম।
সুমহান সৌকুমার্য বিশিষ্ট সৌষ্ঠব আবয়বের এক বজ্র কন্ঠের অধিকারী বাংলার প্রবাদ পুরুষ,’৭১-এর জীবন্ত কিংবদন্তির মহানায়ক বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম।যার নাম শুনলে পাকিস্তানিদের কণ্ঠনালী শুকিয়ে যেত,যিনি এদেশ প্রতিষ্ঠার প্রসব বেদনার সাথে জড়িত,জাতির দুঃসময়ে আবারো সবাই তার দিকে তাকিয়ে।তখনও তিনি কড়া সমালোচনা করে সরকারের ভীত নড়াতে সক্ষম হন।ঠিক তখন রাষ্ট্রপক্ষ তাকে সর্বোচ্চ লোভনীয় প্রস্তাব দিলে তিনি তা প্রত্যাক্ষাণ পূর্বক দুই নেত্রী সহ সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবি করেন।অতঃপর বঙ্গবীরকে হুমকির সাথে লোভনীয় প্রস্তাবটি লুফে নেওয়ার কথা বললে দৃঢ়তার সাথে সকল প্রস্তাব নাখোশ করেন ও নিজ দাবিতে অটল থাকেন।কলমীশক্তি,সভা- সেমিনার,কুটনৈতিক তৎপরতা,রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দ্বারা সরকারকে বাধ্য করেন নির্বাচন দিতে।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ইতিহাস প্রায় অর্ধশত বছরের।নব্য প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে একবিংশ শতাব্দীর কালের প্রবাহে প্রবহমান।আর এই অল্প সময়েই জাতির পিতার হত্যা সহ অনেক কলঙ্কময়ী ইতিহাসের রচনা করেছে হাজারের বছরের ঐতিহ্যবাহী এ বঙ্গতট।জাতির ক্রান্তিলগ্নে বরাবরের মতোই বঙ্গবীর উপস্থিত হয়েছেন অবতার রূপে তার কল্যানীহস্ত প্রসারিত করে।আজো তিনি স্রোতের বিপরীতে নৌকা বেয়ে যাচ্ছেন।তার কাছ থেকে সুবিধা পায়নি এমন লোকের সংখ্যা নেহাত কম,হোক সে তার দলীয় কিবা আজন্মের বিরোধী পক্ষ।তিনি সর্বদাই বাংলাদেশের রাজনীতির দুঃসময়ে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে গেছেন কান্ডারির ন্যায়,আজোবধি এ ধারা অব্যাহত।তাইতো তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে অসুস্থ ফুসফুসের জরুরী অক্সিজেন।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts sent to your email.