কিশোরগঞ্জসারাদেশ

যে গ্রামে আত্নীয় করতে মানুষ বিব্রত বোধ করত, সে সাহেবের চর গ্রাম এখন পর্যটন এলাকা

চির অবহেলিত জীর্ন শীর্ণই ছিল কিশোরগন্জ জেলার হোসেনপুর থানার অন্তর্গত সাহেবের চর গ্রাম।
ছিলনা উপজেলার সাথে যোগাযোগের মত কোন রাস্তা,, পায়ে হেটে দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হতো ছেলেমেয়েদের স্কুল কলেজে যেথে।
রুগী নিয়ে হাসপাতালে যেথে হতো কাঠের তক্তা বা বাঁশের মাচায় করে।কখনো কখনো প্রসূতির সন্তান ভূমিষ্ট হতো রাস্তায়।
বিভিন্ন হাট বাজার বা গঞ্জে বিভিন্ন পন্য মাথায় বহন করে নিয়ে যেথে হাঁপিয়ে উঠতো সোনার ফসল ফলানো কৃষকেরা।
প্রতিকুল পরিবেশে বেড়ে উঠা কিছু মানুষের আচরণে পরিলক্ষিত হতো রুক্ষতা।
এলাকাবাসী সুত্রে যানা যায়, উন্নয়ন থেকে বন্ঝিত থাকার নৈপত্যে ছিলো ভিন্ন একটি পৈশাচিক ভয়াবহতা।তা হল ব্রহ্মপুত্রের রাক্ষসী থাবা।জনমনে কান্নাময় বিষন্নতা বিরাজমান ছিল সর্বদা।
আব্দুল লতিফ (৭০) নামে জৈনেক গ্রামবাসী বলেন -বহু বছর তাইক্কা দেক্খায়তাছি ব্রম্মপুত্র নদের সর্বনাইশা রুপ।বাপ দাদার আমল তেইক্কা
গাঙ্গে বাংতাছে।।
যানা যায় – প্রতিবছর ব্রম্মপুত্র নদের ভাংগনে
 ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে হাজার হাজার বিঘা ফসলী জমি।নদের গর্বে বিলিন হয়েছে অসংখ্য বসত বাড়ী, মসজিদ মাদ্রাসা সহ একটি মাত্র সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।
কিন্তু কালের বিবর্তনে কিছু স্বরিদয়বান ব্যাক্তি বর্গের কোমল প্রচেষ্ঠায় হাজার কষ্টেও অন্তর গহীনে মৃদু সুখের অনুভূতির সৃষ্টি হয়েছে গ্রামবাসীর মনে।পাশ হয়েছে ৪৮ কোটি টাকার,
ব্রম্মপুত্রের বাম তীরের ভাঙ্গন প্রতিরক্ষা বাঁধ।
এ বিষয়ে অত্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব মুহাম্মদ সিরাজ উদ্দীন (এম এ) সাহেবের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান; আমি ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমার ইউনিয়নে উন্নয়নের একটা বড় চ্যালেন্জ হিসেবে নিয়েছি ব্রম্মপুত্র নদের  ভাঙ্গন প্রতিরক্ষা বাঁধ। অবশেষে মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ কৃপায়, প্রয়াত মন্ত্রী মহোদয় সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ডিও লেটারের মাধ্যমে  পাশ হয় উক্ত বাঁধ।
এলাকাবাসী সূত্রে আর জানতে পারি- ব্রম্মপুত্র নদের বেরি বাঁধের কাজ প্রায় শেষের দিকে। এ মৌসুমে নদে ভয়ংকর ভাঙ্গন থাকলেও এ বছর নদে আর ভাঙ্গন নেই।
বরং  যে গ্রামে মানুষ আত্মীয় করতেও ভয় পেত।সে গ্রামের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য অবলোকন করতে ছুটে আসে শত শত পর্যটক।
স্বস্থির নিশ্বাস এখনো এলাকাবাসীর মনে।একটি মাত্র উন্নয়ন কাজকে কেন্দ্র করে পাল্টে গিয়েছে গ্রামের প্রেক্ষাপট।
রাকিব হাসান (২৪) আমাদের বলেন- বাঁধের কাজে যে কাঁচামাল ব্যবহার হচ্ছে কিছুটা নিম্ন মানের।
উল্লেখ্য পাঁচটি প্যাকেজের মাধ্যমে চারটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চলছে ব্রম্মপুত্র নদের বাম তীরের প্রতিরক্ষা বাঁধের কাজ।

সম্পর্কিত সংবাদ

একটি মন্তব্য

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker