স্বাস্থ্য

৮ টাকার ইনজেকশন ৬০০ টাকায় বিক্রি, গ্রেপ্তার ৩

সন্তান জন্মের সময় ব্যথা উপশমের জন্য ব্যবহার করা হয় ‘জি-পেথিডিন’ ইনজেকশন। সংবেদনশীল এ ওষুধ অপারেশন সময় চিকিৎসকরা সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করেন। অথচ এমন গুরুত্বপূর্ণ ইনজেকশনই দীর্ঘ সাত-আট বছর ধরে নকল করে বাজারজাত করে আসছিল একটি চক্র। প্রচলিত ‘জি-ডায়াজিপাম’ ঘুমের ইনজেকশনকে ঘরোয়াভাবে রূপান্তর করে চেতনানাশক ‘জি-পেথিডিন’ ইনজেকশন হিসেবে চালানো হতো। এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। 

আজ মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) এসব তথ্য জানান ডিএমপি গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন আলমগীর খান (৪০), মাসুদ রানা (২৯) ও আহসান হাবীব শাওন (৩০)।

সোমবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর মতিঝিল, বাড্ডা ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি মতিঝিল বিভাগ।

গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে জি-পেথিডিন ইনজেকশন ২০০ পিস, ২২০ পিস জি-পেথিডিনের অ্যাম্পুল, এক হাজার ১০ পিস জি-ডায়াজিপামের অ্যাম্পুল, ৫২০ পিস জি-পেথিডিনের খালি বাক্স, ২০০ পাতা জি-পেথিডিন ইনটেক স্টিকার, পাঁচ কেজি এসিডসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। অথচ ‘জি-পেথিডিন’ তৈরির জন্য শুধু অনুমোদন রয়েছে গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের।

গোয়েন্দা প্রধান বলেন, গ্রেপ্তারদের মধ্যে মো: আলমগীর খান রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকা থেকে ‘জি-ডায়াজিপাম’ ঘুমের ইনজেকশন প্রতিটি আট টাকায় কিনে বাসায় নিয়ে যান। পরে ইনজেকশন অ্যাম্পুলকে এসিড দিয়ে ভিজিয়ে রেখে গায়ে লেখা তুলে কাঠ ও প্লাস্টিক দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি স্কিন প্রিন্ট করার ফ্রেম দিয়ে ‘জি-পেথিডিন’ ইনজেকশনের নামে নামকরণ করে।

পরে এসব অ্যাম্পুল প্লাস্টিকের ট্রেতে পাঁচটি করে সাজিয়ে হাতে চালানো চাপ মেশিন দিয়ে ‘জি-পেথিডিন’ ব্যথানাশক ফয়েল পেপার সংযুক্ত করা হয়। আর বাজারে এসব নকল ‘জি-পেথিডিন’ প্রতিটি ৬০০ টাকায় বাজারজাত করা হয়।

তিনি আরো বলেন, ‘রাজধানীর অনেক খ্যাতনামা হাসপাতালের নিচের বিভিন্ন ফার্মেসিতে এসব ওষুধ ব্যবহার করা হয়। আমরা বারিধারা জেনারেল হাসপাতালের নিচের ফার্মাসিস্টের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছি, তাকে আটক করা হয়েছে। একই সঙ্গে তদন্ত করে যাদের নাম পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশিদ বলেন, এসব ভেজাল ওষুধ বিক্রি করে একদিকে মুনাফা করে আসছিল, অন্যদিকে রোগীদের ঝুঁকির মুখে ফেলে দিচ্ছে চক্রটি। মিটফোর্ডে কারা কারা এসব ঘুমের ইনজেকশন বিক্রি করত এবং কোন কোন স্থানে এসব পেথিডিন বিক্রি করা হচ্ছে এসব বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই পেথিডিন ইনজেকশন প্রয়োগে কেউ মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়েছে কি না এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

Author


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker