আবহাওয়া ও জলবায়ুগাজীপুর

শিলাবৃষ্টি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় এক হাজার পরিবার

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার প্রায় পাঁচটি গ্রামে গতকাল শনিবার রাতে শিলাবৃষ্টির ঝড়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় এক হাজার পরিবার।

এ শিলাবৃষ্টি ঝড়ে ঘরের চালের টিনের ফুটো ও গাছ পালার ব্যাপক ভাংচুর হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলাদি।

এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে উপজেলার মধ্যপাড়া, বোয়ালী, ইউনিয়নের গাছবাড়ি, করইতলী, টান শ্রীপুর, হোসেন মার্কেট, বান্দও মার্কেটসহ প্রায় পাচঁ গ্রামে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব গ্রামের ঘরের চালের ফুটো ও গাছপালা ভাঙচুর, ফসলি জমি নষ্ট, কলা বাগান, সবজি বাগানসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসময় প্রায় এক হাজার পাকা, আধা পাকা ঘরের টিনের ফুটো এবং শতাধিক গাছপালা ভাঙচুর হয়। এদিকে নষ্ট হয়েছে প্রায় ৭০ বিঘা ধানী ফসল, ফল ফলান্তি ও সবজ্বি ক্ষেত।

শিলাবৃষ্টি ঝড়ে নষ্ট হওয়া এসব পরিবার এখন আশ্রয়হীনতায় ভুগছেন। এদিকে গতকাল রাতের ঝড়ে নষ্ট হয়েছে ঘরে থাকা মুল্যবান আসবাবপত্র। শিলা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা ফের বৃষ্টি হলে কোথায় আশ্রয় নিবেন এ আশঙ্কায় ভুগছেন।

আরো পড়ুন: মরা প্রাণীর দুর্গন্ধ দিয়ে প্রতিবেশীকে হেনস্থা করেন খলিল

করইতলী গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুল্লা জানান, গতকাল রাতে নয়টার দিকে ঘরে তারাবির নামাজ পরছিলাম, হটাৎ শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। এ সাথে ঝড়ের তান্ডব। এসময় ঘরের উপর পাশে থাকা বড় কাঠাল গাছ ভেঙ্গে পড়লে আতঙ্কে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বাহির হবো এ জো নেই। বড় বড় শিলাবৃষ্টি শুরু হয়েছে ঘরের চাল ছিদ্র হয়েছে। শিলাবৃষ্টির কারণে ঘরের খাবার চাল ডাল আসবাবপত্রসহ নষ্ট হয়ে গেছে। চালের টিন পরিবর্তন না করলে ঘরে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আর এই মুহুর্তে মেরামত করার মত অর্থও নেই।

Image
ঝড়ে টিনের চালের উপর পড়ে থাকা কাঁঠাল গাছ।

হোসেন মার্কেট এলাকার বাসিন্দা রাজ্জাক মিয়া, রোমেজ উদ্দিন, আমির হোসেন জানান, এ গ্রামে আমরা যারা বসবাস করি অধিকাংশ পরিবার হতদরিদ্র। যার ফলে সরকারী বনের জমিতে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে বসবাস করে আসছি। এ গ্রামে ৫০টি পরিবার বসবাসকারী প্রতিটি বাড়ির ঘরের একটি টিন বাকি নেই যা শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এখন আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। এ ঘর মেরামত করবো সামর্থ নেই আমাদের। দোকানে টিনের দাম দিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে দোকানীরা।

আরো পড়ুন: সরিষাবাড়ীতে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ

দুই সন্তানের জনক করিম হোসেন বলেন, রাতে নামাজ শেষে আমরা খাবার খাচ্ছিলাম। বড় ছেলে খোকন পড়াশুনা করতেছিলো, ঠিক এ সময় শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। এতো বড় বড় শিলা, যা আমরা আগে কখনোই দেখিনি। আগে এমন ঝড় হয়েছে বলেও আমাদের জানা নেই।বাড়ির সামনে সবজ্বি ক্ষেত তৈরি করেছিলাম সেটাও ঝড়ে নষ্ট হলো। ঘরের চাল মেরামত করবো এই মুহুর্তে এমন সামর্থ নেই আমাদের।

এ বিষয়ে কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদ জানান, গতকালের শিলাবৃষ্টি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে তালিকা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সহযোগিতা করা হবে।

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker