দেশজুড়ে ঝড়-বৃষ্টি অনেকটাই বেড়েছে গতকাল শনিবার। কোথাও কোথাও ভারি বৃষ্টিও হয়েছে। ঢাকায় সকাল ৭টার দিকে ঝোড়ো হাওয়াসহ শুরু হয় তুমুল বর্ষণ। আবহাওয়া অফিস বলেছে, সকালের ওই সময় ঢাকায় ৮৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।
এতে রাজধানীর অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতাও তৈরি হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, আজ ও আগামীকাল সোমবারও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে। তবে গতকালের তুলনায় বৃষ্টিপাতের এলাকা কিছুটা কমতে পারে। আর আগামী মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি অনেকটাই কমতে পারে।
এ সময় দিন ও রাতের তাপমাত্রাও বাড়তে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম গতকাল বলেন, রবি (আজ) ও সোমবারও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মোটামুটি ঝড়-বৃষ্টি থাকতে পারে। তবে আজকের (গতকাল) তুলনায় কিছুটা কমতে পারে। মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি আরো কমতে পারে।
এদিকে গতকাল রাজধানীসহ দেশের অনেক অঞ্চলেই ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে, গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশের আট বিভাগের অন্তত ২৯ জেলায় হালকা থেকে ভারি বৃষ্টি হয়েছে। সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে ঢাকা ও টাঙ্গাইলে, ৮৭ মিলিমিটার। এ ছাড়া ভোলায় ৭৩ মিলিমিটার, গোপালগঞ্জে ৬৯ মিলিমিটার ও বাগেরহাটের মোংলায় ৬১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজও রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। সারা দেশে আজ দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আগামীকাল সোমবার রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে।
তাপ আগের মতো তীব্র হবে না
মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি অনেকটাই কমতে পারে। ওই দিন রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টি কমার সম্ভাবনা থাকায় এ সময় থেকে দিন ও রাতের তাপমাত্রাও ধীরে ধীরে বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদরা অবশ্য বলছেন, তাপমাত্রা বাড়লেও তা এপ্রিল মাসের মতো তীব্র হওয়ার সম্ভাবনা কম। লম্বা সময় ধরে তাপমাত্রা বাড়ার আশঙ্কাও কম। ১৪ বা ১৫ মে থেকে তাপমাত্রা বাড়ার প্রবণতা শুরু হতে পারে, যা চলতে পারে ১৯ মে পর্যন্ত। ২০ মে থেকে বৃষ্টি বেড়ে তাপমাত্রা আবার কমতে পারে।
আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম জানান, মাঝে দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে স্বল্প সময়ের জন্য তাপপ্রবাহও থাকতে পারে। ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কোনো কোনো অঞ্চলের ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। সিলেট, চট্টগ্রামসহ অন্য বিভাগগুলোতে কমবেশি বৃষ্টি থাকতে পারে। ফলে এই অঞ্চলগুলোতে তাপপ্রবাহের আশঙ্কা কম।
এদিকে বৃষ্টি বাড়ায় আগের দিনের তুলনায় গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমেছে ০.৬ ডিগ্রি। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে, ৩৪.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় এ সময় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় আগের দিনের তুলনায় গতকাল তাপমাত্রা কমেছে ৩.৪ ডিগ্রি।
দেড় ঘণ্টার বৃষ্টিতে ঢাকায় জলাবদ্ধতা
সকালের টানা প্রায় দেড় ঘণ্টার বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় গতকাল। কোনো কোনো সড়কে জমেছে হাঁটুসমান পানি। এ সময় ভোগান্তিতে পড়েছে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষ। গতকাল সকাল ৭টা থেকে শুরু হওয়া এই বৃষ্টির পানি দুপুর ১টায়ও নামেনি অনেক এলাকা থেকে।
সকালের বৃষ্টিতে রাজধানীর দক্ষিণখান, উত্তরখান, সায়েদাবাদ, শনির আখড়া, বংশাল, নাজিমুদ্দিন রোডসহ পুরান ঢাকা, ধানমণ্ডি, মিরপুর-১৩, হাতিরঝিলের কিছু অংশ, খামারবাড়ি থেকে ফার্মগেট, ফার্মগেট-তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডসংলগ্ন এলাকা, মোহাম্মদপুরের কিছু অংশ, মেরুল বাড্ডা, ইসিবি, ভাটারা নূরের চালা, বাড্ডাসহ বিভিন্ন স্থানে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। বৃষ্টিতে অনেক অফিসগামী মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আবদুল্লাপুর-বাইপাইল সড়কের ইউনিক বাসস্ট্যান্ড থেকে জামগড়া পর্যন্ত সড়ক পানির নিচে দেখা যায়। এ ছাড়া সকালের বৃষ্টিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারে পানি জমলেও তা স্বল্প সময়ের মধ্যে নিষ্কাশিত হয়।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts sent to your email.