যশোরের শার্শায় প্রেম ঘটিত বিষয়কে কেন্দ্র করে শালিসী বৈঠকে মারপিটের ঘটনায় সাইফুল ইসলাম মুকুল (৪০) নামে যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই শরিফুল ইসলাম বকুল (৩৭) আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত বুধবার (২২ মে) শার্শা উপজেলার উলাশী ইউনিয়নের কন্যাদহ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে শার্শা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার। পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামী ইউপি সদস্য হাসানুজ্জামানসহ ৩ জনকে আটক করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
নিহত সাইফুল ইসলাম মুকুল ও আহত শরিফুল ইসলাম বকুল উপজেলার কন্যাদাহ গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে।
আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে গুরুতর জখম মুকুলের অবস্থার অবনতি হলে যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করে পরে সেখানেও অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ জাহারের বরাতে পুলিশ জানায়, শার্শা উপজেলার উলাশী ইউনিয়ন কন্যাদহ গ্রামস্থ আব্দুর লতিফের এর নাতনি আফরোজা (১৪) এর সহিত স্থানীয় আনিসুর রহমানের ছেলে নয়ন হোসেন এর দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলমান ছিল এবং তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক রয়েছে মর্মে দাবী করে একই গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে স্থানীয় ইউপি সদস্য হাসানুজ্জামান, ইব্রাহিম এর ছেলে নুরু, আকিকুল দালালের ছেলে তরিকুল, তাজউদ্দীন, জসিমসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন লোক গত (২২ মে) রাত ৮ টার সময় ভিকটিম শরিফুল ইসলাম বকুল এর বাড়িতে গিয়ে নয়ন কে খুজতে থাকে এবং ভিকটিম শরিফুল নয়ন কোথায় আছে তা জানে মর্মে জানালে উপরিউক্ত বিবাদীগন ভিকটিম শরিফুল ইসলাম বকুলকে এলোপাতাড়ি মারপিট করিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। মারপিটের একপর্যায়ের বিবাদীগন ভিকটিম শরিফুল কে জোর পূর্বক তুলে নিয়ে কন্যাদহ গ্রামস্থ ইউপি সদস্য হাসানুজ্জামানের গরুর ফার্মে নিয়ে হাতুড়ি ও লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে এবং আটক করে রাখে।
উক্ত সংবাদ পেয়ে ভিকটিম এর ভাই সাইফুল ইসলাম মুকুল উক্ত ফার্মে এসে আসামীদের কবল হইতে তাকে উদ্ধার করিতে গেলে তাকেও লোহার রড দিয়ে মাথা লক্ষ্য করিয়া আঘাত করিলে উক্ত আঘাত ভিকটিম সাইফুল ইসলাম মুকুল মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নাভারণ, শার্শায় গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার ভিকটিম বকুলকে ভর্তি করিয়া রাখে এবং ভিকটিম মুকুল এর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন এবং যশোর সদর হাসপাতাল হইতে তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করেন। এ সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুকুল মারা যান।
এ ঘটনায় কন্যাদহ গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে স্থানীয় ইউপি সদস্য হাসানুজ্জামান (৩৫), করিম বক্স এর ছেলে তাজউদ্দীন (৪৫) ও আতিয়ার রহমানের ছেলে কামরুজ্জামান (৩৭) সহ ৩ জনকে আটক করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামীদের আটক করার জন্য পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে বলে তিনি জানান।
শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মনিরুজ্জামান জানান, আহত দুই ভাইয়ের মধ্যে মুকুল নামে একজনের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। মামলার প্রধান আসামী ইউপি সদস্য হাসানুজ্জামানসহ ৩ জনকে আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.