চলমান প্রচণ্ড তাপদাহে কিশোরগঞ্জে হোসেনপুরে হাট-বাজারে বেশ কদর বেড়েছে পানিতালার (তালের শাঁসের)। ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ বি ও সিসহ নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে তালের শাঁসে। পাশাপাশি মৌসুমি ফল হিসেবে তালের শাঁসে অবদান রাখছে গ্রামীণ অর্থনীতিতে। গাছের মালিকরা চুক্তিতে প্রতিটি গাছের তাল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি করে পাইকারদের কাছে। সাধারণত বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাসে পানিতালা মৌসুমি ফল হিসেবে সব বয়সি মানুষের একটি মুখরোচক খাবার হওয়ায় এর চাহিদা বৃদ্ধি পায়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পুমদী, হোসেনপুর, সিদলা, গোবিন্দপুর, জগদল, হাজিপুর, সূরাটি বাজারে ও রাস্তার মোড়ে ভ্যান গাড়িতে করে তালের শাঁস বিক্রি করতে দেখা গেছে বিক্রেতাদের। সেই সঙ্গে দেখা গেছে ক্রেতাদেরও উপচে পড়া ভিড়। তালের শাঁস বিক্রেতা কালাম বলেন, তাল যখন কাঁচা থাকে, তখন বাজারে এটা পানি তাল বা তালের শাঁস হিসেবে বিক্রি হয়। প্রতিটি তালের শাঁস আকার ভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হয়। তিনি আরও বলেন, প্রতিটি তালের ভেতর দুই থেকে তিনটি শাঁস থাকে। প্রয়োজনীয় পরিচর্যা এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বহু তালগাছ অকালে মরে যাচ্ছে।
জগদল বাজারে তালের শাঁস বিক্রেতা নাজমুল বলেন, ভ্যানে করে বিভিন্ন বাজারে এই ব্যবসা করি আমি। দৈনিক ৫০০ টাকা থেকে হাজার টাকাও ব্যবসা হয়। জগদল বাজারে আল আমিন ভূঁইয়া বলেন, বাজারের অন্য সব ফলে ফরমালিন বা ক্যামিকেল থাকলেও তালের শাঁসে কোনো ফরমালিন বা ক্যামিকেল মেশানো থাকে না। এতে শরীরের ক্লান্তিও দূর হয়। তাই এই গরমে আমি তালের শাঁস খেয়ে থাকি।
হোসেনপুর মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যাপক আশরাফ আহমেদ সোহাগ জানান, এ বছর প্রচণ্ড তাপদাহে তালের শাঁসের কদর গত কয়েক বছরের তুলনায় বেশি। তালের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা গ্রামগঞ্জ থেকে তাল সংগ্রহ করে সড়কের পাশে ও অলিগলিতে বিক্রি করছেন।
হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: তানভীর হাসান জিকো বলেন, তালের শাঁসের অনেক উপকারিতা রয়েছে। এ শাঁস খেলে ক্লোন ক্যান্সারের সম্ভাবনা কম থাকে। তিনি আরো বলেন, পরিস্কার পরিছন্নভাবে না খেলে আবার ডায়েরিয়ারও ঝুঁকি থাকে।