ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁওয়ে গড়েয়াতে পোকা দমনে আলোক ফাঁদ

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় আলোক ফাঁদ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমন ধানে ক্ষতিকর পোকামাকড়ের উপস্থিতি চিহ্নিত, পর্যবেক্ষণ ও দমন কার্যক্রম চলছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহায়তায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কৃষকেরা গত ২৪ আগস্ট থেকে ৬৭টি ব্লকে আলোক ফাঁদ প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেছেন। যা অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।

আলোক ফাঁদ প্রযুক্তির মাধ্যমে সন্ধ্যায় ক্ষেতে আলো (বাল্ব) জ্বালানো হয়। আলোর নিচে ডিটারজেন্ট বা কেরোসিন মিশ্রিত পানির পাত্র রাখা হয়। আলোতে আকৃষ্ট হয়ে পোকামাকড় আসে এবং পাত্রের পানির মধ্যে পড়ে। ওই সব পোকামাকড় দেখে ক্ষতিকর পোকামাকড়ের উপস্থিতি নির্ণয় করা হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে অনেক কৃষকরা এরই মধ্যে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে পোকামাকড় দমনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা শুরু করেছেন।

কৃষি অফিসের মতে, ধানে বাদামি ঘাসফড়িং, সবুজ পাতাফড়িং, পাতা মোড়ানো পোকা, গান্ধী পোকা, মাজরা পোকাসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর পোকা আক্রমণ করে। এর মধ্যে বাদামি ঘাসফড়িং বা কারেন্ট পোকা সবচেয়ে ক্ষতিকর। এ পোকা যে গাছে আক্রমণ করে সেটি সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে যায়। এতে ফলন কমে যায় বা অনেক সময় ফলন নেমে আসতে পারে শূন্যের কোটায়।

উপজেলার ৬৭টি ব্লকে চলতি বছরে আমন ধানের আবাদ হয়ছে ৫১ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে উপজেলার সকল ইউনিয়নেই এই আলোক ফাঁদ স্থাপন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

তারি ধারাবাহিকতায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়ায় আলোক ফাঁদ মাধ্যমে পোকা সনাক্ত করণ করা হয়।

রবিবার সন্ধ্যায় ৬ টায় গড়েয়া কিসমত তেয়ারীগাঁও গ্রামের গড়েয়া শাহ পাড়া মোড়ে সাধারণ কৃষকদের নিয়ে পোকা চিহ্নিত করন কার্যক্রম পরিচালনা করেন, অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা , আসাদুজামান ও পরিতোষ অধিকারি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আবাদকৃত আমন ধানের বিভিন্ন জমিতে আলোক ফাঁদ তৈরি করছেন অনেক কৃষক। তারা ধান ক্ষেতের পাশে ফাঁকা জায়গায় বাঁশের তিনটি খুঁটি ত্রিকোণাকৃতি করে পুঁতে রেখেছেন। ওই খুঁটির মাথায় একটি বাল্ব জ্বালানো আছে। বাল্বের নিচে একটি পাত্রে কেরোসিন মিশ্রিত পাতিল রাখা হয় এবং আলোতে পোকা এসে ওই কেরোসিন মিশ্রিত পাত্রে পড়ে। এ ছাড়া অনেক কৃষক পোকা দমনে হারিকেন বা সৌর বিদ্যুতের বাতি জ্বালিয়েও আলোক ফাঁদ তৈরি করেন।

পোকা শনাক্ত করে সঠিক কিটনাশক সঠিক সময়ে ব্যবহার করে অল্প খরচে রোগ ও পোকা দমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষ্ণ রায় বলেন, ‘বিভিন্ন ব্লকে আলোক ফাঁদ স্থাপন করে পোকা শনাক্ত করে সে অনুযায়ী লিফলেট বিতরণ, উঠান সভা, দলীয় আলোচনা ও মোবাইলে পরামর্শ দেয়া অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত ৬৭টি ব্লকে ১২৩টি আলোক ফাঁদ, ৩৬টি উঠান বৈঠক ও দলীয় আলোচনা করা হয়েছে। নিবিড় পরিদর্শন ও পরামর্শ অব্যাহত রেখে ফসলকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে আনার বিষয়ে কৃষি বিভাগের সকল কর্মকর্তা সর্বদা নিয়োজিত রয়েছে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker