লাউ গাছের সঙ্গে এ কেমন শত্রুতা! ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষক দম্পতির চার বিঘা জমির ফসল কেটে দিল দুর্বৃত্তরা
লাউ গাছের সঙ্গে শত্রুতা! হ্যাঁ, এমনই এক হৃদয়বিদারক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালান্দর শিংপাড়া গ্রামের মানুষ। এলাকার বর্গাচাষি ওমর আলী ও তার স্ত্রী মিলে শ্রম দিয়ে যে চার বিঘা জমিতে লাউ চাষ করেছিলেন, তা এক রাতেই শেষ করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
বুধবার (৭ মে) সকালে ওমর আলী মাঠে গিয়ে দেখতে পান—গাছের পাতাগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। পরে খোঁজ নিয়ে দেখেন, রাতের আঁধারে সব গাছের গোড়া কেটে দেওয়া হয়েছে। এতে চরম হতাশায় পড়েছেন তিনি ও তার পরিবার।
চুরির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ‘ভোলার’ দিকেই অভিযোগ
ওমর আলী জানান, সুগার মিলের জমি ৩০ হাজার টাকা একর দরে লিজ নিয়ে লাউ চাষ শুরু করেছিলেন। গাছগুলো বেড়ে উঠছিল, ফুল ও ছোট ছোট লাউও ধরেছিল। কিছুদিন পর বাজারে বিক্রির উপযোগী হতো ফসলগুলো।
তিনি বলেন,
“গত রাতে করলা ও কুমড়ার ক্ষেত থেকে চুরি করতে এসে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে আব্দুর রহিম (ভোলা)। পরে তাকে চড়থাপ্পড় দিয়ে তার বাবার জিম্মায় দেওয়া হয়। এরপরই রাতের আঁধারে সে আমার লাউ ক্ষেত কেটে দেয়। এর আগে কোনো শত্রুতা ছিল না কারও সঙ্গে।”
প্রতিবেশীরাও বলছেন—”এটা গরিবের পেটে লাথি মারা”
স্থানীয় বাসিন্দা আকবর বলেন,
“ভোলা চুরি করতে গিয়েই ধরা পড়ে। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিল। সে ছাড়া এই ধরনের নিকৃষ্ট কাজ কেউ করতে পারে না। শত্রুতা থাকলে থাক, ফসলের সঙ্গে এমন আচরণ কেন?”
আরেক প্রতিবেশী আবুল হোসেন বলেন,
“এই কাজের মাধ্যমে তারা শুধু ওমর আলীর নয়, তার পরিবারের মুখের খাবার কেড়ে নিয়েছে। এটি সরাসরি কৃষকের পেটে লাথি মারা।”
অভিযোগ অস্বীকার পরিবারের
অভিযুক্ত আব্দুর রহিমের (ভোলা) বাবা আছমত আলি বলেন,
“আমার ছেলে কিছু করেনি। ও তো বাড়িতেই ছিল। এসব অভিযোগ মিথ্যা।”
কৃষি অফিস ও প্রশাসনের সহায়তার আশ্বাস
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাছিরুল ইসলাম জানান,
“ঘটনাস্থলে প্রতিনিধি পাঠানো হয়েছে। কৃষককে থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়া হবে।”
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি মো. সারোয়ার ইসলাম বলেন,
“এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”