কক্সবাজার

ধর্ষণকাণ্ডের আগেও গ্রেপ্তার হন ওই নারী

গত বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকা থেকে কক্সবাজার স্বামী-সন্তানের সঙ্গে বেড়াতে আসা এক নারী ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ শিকার হয়েছিলেন।

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ এর সিপিসি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান জানান, বুধবার (২২ ডিসেম্বর) দিনগত রাত দেড়টার দিকে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোনের জিয়া গেস্ট ইন নামের হোটেল থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে ওই নারীর স্বামী চারজনের নাম উল্লেখ ও তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন।

মামলায় নাম উল্লেখ করা চার আসামি হলেন কক্সবাজার শহরের মধ্যম বাহারছড়া এলাকার আশিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ শফি ওরফে ইসরাফিল হুদা জয় ওরফে জয়া, মেহেদী হাসান বাবু ও জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটন।

তবে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ শিকার ওই নারীর বিরুদ্ধে বেরিয়ে এসেছে গোপন তথ্য। একটি অনলাইন গণমাধ্যমকে পুলিশ জানান, ধর্ষণের অভিযোগ তোলা ওই নারী চলতি বছরের জানুয়ারিতে জেলা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। সে সময় একটি মামলার আসামি হিসেবে কারাগারেও গিয়েছিলেন তিনি। তবে এর কিছু দিনের মধ্যে তিনি জামিনে ছাড়া পান।

পুলিশ জানায়, অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি কক্সবাজার শহরের হোটেল-মোটেল জোনে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সে সময় বেআইনি ও অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে ৫৪ জন নারী-পুরুষকে আটক করে পুলিশ।আটক হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ওই নারীও ছিলেন। এরপর আটক হওয়া নারী পুরুষের বিরুদ্ধে ‘মানবপাচার, পতিতালয় পরিচালনা এবং পতিতাবৃত্তি ও সহায়তার’ অভিযোগ মামলা করা হয়। মামলায় ২৭ নম্বর আসামি হিসেবে ওই নারীর নাম উল্লেখ করা হয়।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (অপারেশন) সেলিম উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তাকে (ওই নারী) আটক করার পর মানবপাচার মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।’

ওই নারীর বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান ওসি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলছেন, এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত আশিকসহ কয়েক জন ওই নারীর পূর্ব পরিচিত। অভিযোগকারী নারী তিন মাস ধরে কক্সবাজারে আছেন বলেও জানিয়েছেন তারা।

এ ঘটনায় জিয়া গেস্ট ইন হোটেল ম্যানেজার রিয়াজুদ্দিন ছোটনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

উল্লেখ্য, বুধবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজার বেড়াতে এসে শহরের হলিডে মোড়ের একটি হোটেলে ওঠেন। পরে বিকেলে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে যান। সেখানে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগে। এ সময় এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এর জেরে সন্ধ্যার পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে ভুক্তভোগী নারীর ৮ মাসের সন্তান ও স্বামীকে অটোরিকশা করে কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়। এ সময় আরেকটি অটোরিকশায় তাকে তুলে নেয় ৩ যুবক। পরে পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে ভুক্তভোগী গৃহবধূকে ধর্ষণ করে তারা।

এর পর ভুক্তভোগীকে জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে নিয়ে আরেক দফা ধর্ষণ করা হয়। এ সময় ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করা হবে জানিয়ে রুম বাইরে থেকে বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ধর্ষকরা। পরে ভুক্তভোগী গৃহবধূ জাতীয় জরুরি সেবা নাম্বার ৯৯৯-এ কল করেন। পুলিশ তাকে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেয়। পরে র্যাহব এসে তাকে উদ্ধার করে। তার স্বামী ও সন্তানকে উদ্ধার করা হয় পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে।


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker