আন্তর্জাতিক

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত সম্পর্কে যা জানা গেল

গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। মিশর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় হামাস। যদিও ইসরায়েল এবিষয়ে এখনও সম্মত হয়নি। তেল আবিব জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির শর্তে তাদের চাওয়া পূরণ হয়নি। তবে আলোচনা চালিয়ে যেতে মিশরে প্রতিনিধি পাঠাবে তারা।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন টেলিফোনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেন। বাইডেন ইসরায়েলের গাজার রাফায় স্থল অভিযানের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। পাশাপাশি হামাসের হাতে জিম্মি ব্যক্তিদের রক্ষায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি সর্বোত্তম পথ বলে উল্লেখ করেন।

হামাসের সম্মতি পাওয়া প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে কী কী শর্ত আছে- তা নিয়েই চলছে আলোচনা। কী রয়েছে সেই চুক্তিতে? কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে চুক্তির শর্তগুলো তুলে ধরেছে। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, চুক্তিটি কিছুটা জটিল। তবে এতে তিনটি পর্যায় রয়েছে। প্রতিটি পর্যায়ের স্থায়ীত্ব হবে ছয় সপ্তাহ।

প্রথম পর্যায়ে, হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে বৈরিতা সাময়িকভাবে বন্ধ হবে। গাজার অধিক জনবহুল এলাকা থেকে দূরে এবং ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন সীমান্তের পূর্ব দিকে ইসরায়েলি বাহিনীকে সরিয়ে নেয়া হবে। গাজার ওপর দিয়ে ইসরায়েলি বিমান এবং ড্রোন চলাচল প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা করে বন্ধ থাকবে। তবে বন্দিদের মুক্তি দেয়ার দিন ১২ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে।

চুক্তির প্রথম ধাপে ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। এই দফায় যারা মুক্তি পাবেন তারা হলেন, নারী, শিশু, প্রবীণ ও অসুস্থ ব্যক্তিরা। হামাসের প্রতিজন জীবিত ইসরায়েলিকে মুক্তির বিনিময়ে ৩০ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে তেল আবিব। আর প্রতিজন নারী ইসরায়েলি বন্দি সেনা মুক্তির বিনিময়ে ৫০ জন ফিলিস্তিনি মুক্তি পাবে।

ইসরায়েল তাদের বাহিনী প্রত্যাহার করার পাশাপাশি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের গাজার নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেবে; এই প্রক্রিয়াটি হামাস বন্দিদের মুক্তি দেয়ার সাথে সাথে ধীরে ধীরে ঘটবে। পৃথকভাবে, চুক্তিতে বলা হয়েছে, গাজায় পুনর্গঠনের কাজ এই পর্যায়ে (প্রথম পর্যায়ে) শুরু করতে হবে। একইসাথে ইউএনআরডব্লিউএ-সহ অন্যান্য ত্রাণ সংস্থাগুলোকে বেসামরিকদের সাহায্যে কাজ করার অনুমতি দেয়া হবে।

চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে, সামরিক অভিযানের স্থায়ী সমাপ্তি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলের সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার হবে। এই ধাপে হামাস ইসরায়েলের সব জিম্মিকে মুক্তি দেবে। বিনিময়ে কয়েকশ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল।

তৃতীয় ধাপে, হামাসের হামলায় বা তাদের কাছে জিম্মি অবস্থায় যারা নিহত হয়েছেন, তাদের সবার মরদেহ ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করা হবে। বিনিময়ে ইসরায়েলে বন্দি অবস্থায় মারা যাওয়া ফিলিস্তিনিদের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। এই ধাপে গাজা পুনর্গঠনে তিন থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা প্রস্তুত করা হবে। অবকাঠামো পুনর্গঠনের কাজও শুরু হবে এই ধাপে।


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker