
গোপন পরিসরকে খোলা আকাশের নিচে নিয়ে গিয়েছিলেন। প্রথাগত নিয়মের বাইরে বেরিয়ে সেই সুখলাভের ইচ্ছাই তাঁদের সামনে কাল হয়ে এসে দাঁড়ায়। প্রকৃতির মাঝে সঙ্গমের সময় ছাদ থেকে পড়ে আচমকা নেমে আসে মর্মান্তিক মৃত্যু।
আমেরিকার দক্ষিণ ক্যারোলিনা প্রদেশের কলম্বিয়া শহরের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর সাড়া ফেলে দিয়েছিল চার দিকে। ২০০৭ সালের জুলাই মাসে সেখানেই মৃত্যু হয় এক প্রেমিক যুগলের।
মৃত যুগলের নাম ব্রেন্ট টাইলার এবং চেলসি টিউবলস্টন। দু’জনের বয়সই ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। তাঁদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত করে খুঁটিনাটি তথ্য প্রকাশ করেছিল পুলিশ। যা কলম্বিয়ার প্রেমিক যুগলকে স্মরণীয় করে রেখেছে।
কোনও এক ভোর বেলায় যুগলকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় স্থানীয় অফিসের সামনের রাস্তা থেকে। ভোর ৫ টার দিকে সেখান থেকে যাচ্ছিলেন এক ট্যাক্সিচালক। তিনিই যুগলকে দেখতে পান।
সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় রাস্তায় পড়েছিলেন যুগল। দু’জনেরই শরীর থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। ট্যাক্সিচালক তাঁদের দেখে থানায় খবর দেন। দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ।
গুরুতর আহত অবস্থায় যুগলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পথেই তাঁদের মৃত্যু হয় বলে জানায় পুলিশ। যুগলের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে তারা তদন্তে নামে।
যুগলের এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর নেপথ্যে অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে আছে কি না, তা খতিয়ে দেখেছিল পুলিশ। কিন্তু তন্ন তন্ন করে খুঁজেও কোনও অপরাধের খোঁজ মেলেনি।
তদন্তের শেষে পুলিশ জানায়, যে অফিসের সামনে থেকে যুগলকে উদ্ধার করা হয়েছিল, সেই ভবনটি ৫০ ফুট উঁচু। ওই অফিসের ছাদে ভোরবেলা যৌন মিলনের উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন যুগল।
চার দেওয়ালের মাঝে আবদ্ধ যৌনতা তাঁদের কাছে সম্ভবত একঘেয়ে হয়ে উঠেছিল। সে কারণে অফিসের ছাদকে বেছে নিয়েছিলেন।
কিন্তু অসাবধানতায় যুগল খেয়াল করেননি, তাঁরা ছাদের একেবারে কিনারায় এসে পৌঁছেছেন। ছাদটি ঢালু ছিল। ফলে আচমকা পা পিছলে পড়ে যান তাঁরা। ৫০ ফুট উচ্চতা থেকে নীচে পড়েন।
কলম্বিয়ার এই যুগলের মতো পরিণতি হয়েছিল ইকুয়েডরের এক যুগলেরও। অন্তরঙ্গের নেশা তাঁদেরও মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। উঁচু বারান্দা থেকে পড়ে মৃত্যু হয় দু’জনের।
২০১৯ সালের ঘটনা। ইকুয়েডরের রাজধানী শহর কুইটোতে মৃত্যু হয় ২৮ বছরের তরুণী এবং ৩৫ বছরের যুবকের। অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে, ফ্ল্যাটের বারান্দায় দাঁড়িয়ে অন্তরঙ্গ হয়েছিলেন তাঁরা।
এ ক্ষেত্রেও যুগল খেয়াল করেননি যে, তাঁরা চার তলার বারান্দার একেবারে ধারে পৌঁছে গেছেন। হঠাত সেখান থেকে দু’জন একসঙ্গে নীচে পড়ে যান।
যুগলের রক্তাক্ত দেহ ফ্ল্যাটের নিচে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন প্রতিবেশী। তিনিই পুলিশে খবর দেন। ওই নারীর ৮ বছর বয়সি এক সন্তান ছিল। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা মাতৃহারা করেছে তাকেও।