আন্তর্জাতিক

গুজরাট ট্রাজেডিকে ‘ঈশ্বরের ইচ্ছা’ বললেন অভিযুক্ত ম্যানেজার

ভারতের গুজরাটের মোরবিতে রোববার একটি ঝুলন্ত সেতু ধসের ঘটনায় ১৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেতুটির ফিটনেস ও নিরাপত্তা নিয়ে নানা গাফলতির অভিযোগ উঠলেও এ ঘটনাকে স্রেফ ‘ঈশ্বরের ইচ্ছা’ বলে মন্তব্য করেছেন এক অভিযুক্ত।

ওই অভিযুক্তের নাম দীপক পারেখের। ১৫০ বছরের পুরনো সেতুটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ওরেভা কোম্পানির ম্যানেজার তিনি। ব্রিজ ধসের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ৯ জনের মধ্যে তিনি একজন।

বুধবার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম জে খানকে এ অভিযুক্ত বলেন, ভগবানের ইচ্ছাতেই (ঈশ্বরের ইচ্ছা) এ ধরনের একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটছে।

এ সময় আদালতে কোম্পানির দায় অস্বীকার করেন তিনি।

তবে মোরবির ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ পিএ জালা আদালতকে জানিয়েছেন, সেতুর তারে ‘মরিচা’ পড়েছিল এবং এটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা সংস্থা তা পরিবর্তন করেনি।

এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, সরকারি অনুমোদন বা মান পরীক্ষা ছাড়াই গত ২৬ অক্টোবর সেতুটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের অংশ হিসাবে, শুধুমাত্র সেতুর প্ল্যাটফর্মটি (মেঝেটি) পরিবর্তন করা হয়েছিল। সেতুটি একটি তারের ওপর ঝুলে ছিল এবং তারে কোনো তেল বা গ্রীসিং করা হয়নি। যে অংশে তারটি ভেঙেছিল, সেখানে তারে মরিচা ধরেছিল। তারটি মেরামত করা হলে এ ঘটনা ঘটতো না।

তদন্তকারী কর্মকর্তাদের মতে, যেহেতু সেতুর তার প্রতিস্থাপন করা হয়নি, তাই নতুন মেঝেটির ওজন নিতে না পারায় তা ভেঙে পড়ে। মেঝেতে ব্যবহৃত চার স্তর বিশিষ্ট অ্যালুমিনিয়ামের পাতের কারণে সেতুর ওজন বেড়ে যায়।

এর আগে ওরেভার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জয়সুখভাই প্যাটেল প্রকাশ্যে দাবি করেছিলেন যে, সংস্কার করা সেতুটি কমপক্ষে আট থেকে দশ বছর টিকে থাকবে।

যদিও এ দুর্ঘটনার পর থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছেনা। সেতুটি পুনরায় খোলার সময় তাকে শেষ দেখা গিয়েছিল। আহমেদাবাদে ওরেভা কোম্পানির খামারবাড়িও বর্তমানে তালাবদ্ধ এবং পরিত্যক্ত।

এনডিটিভি বলছে, এতো কিছুর পরও পুলিশের এফআইআরে ওরেভার শীর্ষ কর্তাদের বা মোরবি পৌরসভার কর্মকর্তাদের নামের উল্লেখ নেই।

এর আগে রোববার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মোরবি জেলায় মাচ্চু নদীর উপর ওই ঝুলন্ত সেতুটি কয়েকশ মানুষ নিয়ে হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়ে। এতে অন্তত ১৩৪ জন নিহত হয়।

সেসময় সেতুতে থাকা অনেকেই অন্ধকারে ছিটকে নদীতে পড়ে যান। সোশ্যাল মিডিয়ায় আসা ভিডিওতে ভেঙে পড়া সেতু থেকে বহু মানুষকে ঝুলে থাকতেও দেখা গেছে। এসময় সাহায্য পাওয়ার জন্য অনেকে চিৎকার করছিলেন।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সোমবার (৩১ অক্টোবর) সকালে নিহতের সংখ্যা ১৪১ বলে জানালেও পরে তা সংশোধন করা হয়।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker