ট্রাম্পের শুল্কের ঝুঁকিতে আয়ারল্যান্ড, প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমালো সরকার
ইইউ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কায় অর্থনীতিতে ধাক্কার আশঙ্কা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির প্রেক্ষাপটে সম্ভাব্য বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কায় ২০২৫ সালের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছে আয়ারল্যান্ড সরকার।
দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি (Modified Domestic Demand) ২০২৫ সালে ২.৫ শতাংশ হবে বলে এখন ধারণা করা হচ্ছে, যা পূর্ববর্তী ২.৯ শতাংশ পূর্বাভাসের তুলনায় কম। যদি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ শুল্ক যুদ্ধ বেঁধে যায়, তাহলে প্রবৃদ্ধি কমে ২ শতাংশে, আর ২০২৬ সালে আরও কমে ১.৭৫ শতাংশে নেমে আসতে পারে।
“বহির্বিশ্বের অনিশ্চয়তা বড় বাধা” — অর্থমন্ত্রী
আয়ারল্যান্ডের অর্থমন্ত্রী পাসকাল ডোনোহু বলেন, “বর্তমান বৈশ্বিক পরিবেশ আরও প্রতিযোগিতামূলক ও খণ্ডিত হয়ে উঠছে, যা আয়ারল্যান্ডের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা বরাবরই নিয়মভিত্তিক বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থার সুবিধা পেয়েছি।”
তিনি আরও জানান, অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও পরিবার এখন বড় ধরনের খরচ এড়িয়ে চলছে—একটি ‘অপেক্ষা করে দেখা’র মনোভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক-ঝুঁকিতে আয়ারল্যান্ড
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে আয়ারল্যান্ড। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আয়ারল্যান্ডের পণ্যের রপ্তানি ছিল ৭৩ বিলিয়ন ইউরো, যা মোট রপ্তানির এক-তৃতীয়াংশ। এর বড় অংশই ছিল ওষুধ ও ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য। নতুন শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগেই ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি ২০০ শতাংশেরও বেশি বেড়ে যায়।
ট্রাম্পের শুল্ক ও ইইউ’র জবাব
চলতি এপ্রিল মাসে ট্রাম্প প্রশাসন সব দেশের পণ্যের ওপর সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে এবং ইইউসহ কিছু অংশীদার দেশের জন্য ২০ শতাংশ ‘পাল্টা শুল্ক’ প্রস্তাব করে। তবে এই পাল্টা শুল্ক আপাতত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে এবং আলোচনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
ইইউর বাণিজ্য কমিশনার মারোস সেফচোভিচ ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বলেন, “আমরা কোনো চাপ অনুভব করছি না। ন্যায্যতা ছাড়া আমরা কোনো চুক্তি মেনে নেব না।” তিনি জানান, আলোচনায় ব্যর্থ হলে ইইউ পাল্টা ব্যবস্থা নিতেও প্রস্তুত।