ভার্চুয়াল সিম বা ই-সিমসহ সব ধরনের সিম সরবরাহের ওপর ২০০ টাকা ভ্যাট অব্যাহতিসহ ১৬ প্রস্তাব দিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল অপারেটরস অব বাংলাদেশ (এমটব)।
রোববার (১২ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় সংগঠনের মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএম ফরহাদ (অবসরপ্রাপ্ত) দাবিগুলো তুলে ধরেন।
এনবিআরের সদস্য মো: মাসুদ সাদিকের (কাস্টমস নীতি) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় এমটব ছাড়াও ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি), বিড়ি শিল্প মালিক সমিতি ও বাংলাদেশ বেভারেজ ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে এনবিআরের পক্ষে জাকিয়া সুলতানা (ভ্যাটনীতি) এবং সামসুদ্দিন আহমেদ (আয়কর নীতি) উপস্থিত ছিলেন।
সিম সরবরাহে ভ্যাট অব্যাহতির প্রস্তাব দিয়ে এমটর মহাসচিব বলেন, ভ্যাট অপসারণ করা হলে মোবাইল অপারেটরদের পক্ষে গ্রামাঞ্চলে এবং বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠীর মাঝে আকর্ষণীয় প্যাকেজ নিয়ে হাজির হওয়া সুবিধাজনক হবে। যা বাংলাদেশের ডিজিটাইজেশন লক্ষ্য অর্জন করার জন্য সহায়ক হবে, সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে এবং শিল্প খাতের উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।
এমটব মহাসচিব ফরহাদ আরও বলেন, বাংলাদেশে যে কয়টি খাত সরকারকে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব দেয়, মোবাইল খাত তার অন্যতম। মানুষের টেলিযোগাযোগ এবং ইন্টারনেট প্রাপ্তির প্রধান উৎস থেকে শুরু করে ব্যাংকিং, মোবাইল মানি, রাইড শেয়ারিং, ই-কমার্স, শিক্ষা, কিংবা ই-কুরিয়ারসহ সব খাতই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মোবাইলের ওপর নির্ভরশীল। তারপরও দেখা যায়, সরকার এ খাতে প্রতি বছর নতুন করে করারোপ করছে।
তিনি বলেন, মোবাইল খাতের কর ব্যবস্থাকে যৌক্তিকভাবে বিবেচনা করে এ খাতের প্রবৃদ্ধিকে উৎসাহিত করা না হলে তার প্রভাব আর সব খাতের ওপর পড়বে। মোবাইল সেবাদাতাদের প্রবৃদ্ধি যত বাড়বে গ্রাহকরা তত উৎকৃষ্ট মানের সেবা পাবে এবং সরকার বেশি বেশি করে রাজস্ব পাবে।
সংগঠনের প্রস্তাবে বলা হয়, মোবাইল অপারেটরদের বার্ষিক মোট রাজস্ব প্রাপ্তির ২ শতাংশ ন্যূনতম কর হিসেবে প্রদান করতে হয়, যা আয়কর আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
তিনি বলেন, ব্যবসায় লোকসান সত্ত্বেও ন্যূনতম কর প্রদান করার অর্থ হলো- মূলধন হতে কর পরিশোধ করা, যা ব্যবসা সম্প্রসারণের পক্ষে প্রতিবন্ধক। এখানে উল্লেখ্য যে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সিগারেট বা তামাকশিল্পের ক্ষেত্রে ন্যূনতম কর ১ শতাংশ। সেই বিবেচনায় মোবাইলের মতো জরুরি খাতের জন্য ২ শতাংশ ধার্য ন্যূনতম কর যৌক্তিক নয়। শিল্প টিকিয়ে রাখার পক্ষে ও সরকারঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ করার লক্ষ্যে ন্যূনতম কর অপসারণ করার বিকল্প নেই।
এতে আরও বলা হয়, দেশে সাধারণ করপোরেট ট্যাক্স হার অতালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ২০ থেকে ২২ দশমিক ৫ শতাংশ। অথচ জরুরি সেবা হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ মোবাইল খাতের জন্য উচ্চহারে করপোরেট কর দিতে হয়। স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত মোবাইল অপারেটরদের ক্ষেত্রে করের হার ৪০ শতাংশ ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ৪৫ শতাংশ। এ কারণে করারোপের ক্ষেত্রে মোবাইল অপারেটরদের পৃথক শ্রেণিভুক্ত না করে অন্যান্য কোম্পানির সারিতে পুনর্বিন্যস্ত করে সেই হারে কর হ্রাস করার দাবি জানিয়েছে এমটব।
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের (বিএটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেহজাদ মুনিম নকল ব্যান্ড রোল ও নকল সিগারেট বন্ধ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, নকল সিগারেটের কারণে সরকার বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে। এ সিগারেট বন্ধ করা হলে রাজস্ব আরও বাড়বে। নতুন করে কর বাড়ানো হলে ভোক্তাদের ওপর আরও চাপ বৃদ্ধির পাশাপাশি বিদেশ থেকে চোরাচালান হয়ে বিদেশি সিগারেট ঢুকবে।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts sent to your email.