অ্যান্টিবায়োটিকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে আগামী ত্রিশ বছরের মধ্যে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যাটা হতে পারে করোনায় মৃত্যুর দ্বিগুণ হতে পারে ধারণা করছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়–বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা: শারফুদ্দিন আহমেদ।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে জাপানের তোমাকিই বায়ো লিমিটেড, তোমাকিই ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানি লিমিটেড ও ওকোহামা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এসব কথা জানান তিনি।
জাপান প্রতিনিধি দলের সাথে আলাপের সময় বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্সের কারণে ২০৫০ সালে করোনা মহামারীর চেয়েও বেশী সংকটে পড়বে দেশ। মাত্রাতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে আগামী ২০৫০ সালে দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর চেয়ে দ্বিগুণ মানুষ মৃত্যু হতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
উপাচার্য জানান, সবার স্বার্থে মাত্রা অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার রোধ করতে হবে। রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া যাতে কোন ফার্মেসি অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ বিক্রি করতে না পারে, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবর্গকে এগিয়ে আসতে হবে। এ সময় জাপান ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে ক্লিনিকাল ট্রায়ালসহ নানাবিধ বিষয়ে গবেষণা নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা।
উল্লেখ্য, অনেকেই জ্বর বা রোগের উপসর্গ শেষ হওয়া মাত্রই অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া বন্ধ করে দেন। অথচ সঠিক পরিমাণে এবং সঠিক সময় পর্যন্ত এন্টিবায়োটিক ওষুধের কোর্সটি শেষ না করলে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া পুরোপুরি ধ্বংস না হয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
তখন আর ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে সেই অ্যান্টিবায়োটিকের কোনো প্রভাব থাকে না। ফলে আবারো অসুখে পড়লে নির্দিষ্ট ওষুধগুলো আর কোন কাজ করে না। এই অবস্থাকেই বলা হয়ে থাকে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স।
স্বাস্থ্য বিষয়ক আন্তর্জাতিক সাময়িকী ল্যানসেটের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওষুধের এমন অকার্যকারিতার কারণে ২০১৯ সালে বিশ্বব্যাপী ১২ লাখ মানুষ মারা গেছে। এর বাইরেও আরও ৫০ লাখ মানুষ এই সংক্রান্ত নানা অসুখে মারা গেছে।
সাক্ষাৎকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ডা: মো: শারফুদ্দিন আহমেদ ও পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা: মারুফ হক খান, জাপানি প্রতিনিধি দলের পক্ষে ওকোহামা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড: মেহরুবা, তোমাকিই ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানি লিমিটেডের নির্বাহী ব্যবস্থাপক নাকাহার সন্তোষী, তোমাকিই বায়ো লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার ইমাই জুনইয়া উপস্থিত ছিলেন।