লালমনিরহাট জেলায় প্রায় ২৫/৩০ মিনিট ধরে হঠাৎ শিলা বৃষ্টিতে কৃষকের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে করে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অনেকে বলছেন এই শীত মৌসুমের শেষ দিকে এরকম শিলা বৃষ্টি কখনো দেখা যায়নি।
সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারী)সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ ঝড়ো হাওয়াসহ শিলা বৃষ্টি শুরু হয়। চলে প্রায় ২৫/৩০ মিনিট ধরে। এতে বিপাকে পড়ে জেলার হাজারো কৃষক। শিলা বৃষ্টিতে ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে,লালমনিহাটের ৫ উপজেলায় সোমবার সকাল থেকে সূর্যের মুখ দেখা মেলেনি। সারা দিন ছিল কনকনে শীত আর হিমেল হওয়া। এতে সাধারন মানুষ বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষ গুলো বিপাকে পড়েছে। অনেকে ঘর থেকে বেরোতে পারেনি। রাস্তাঘাটে গাড়িঘোড়ার সংখ্যা ছিল কম।
এদিকে লালমনিরহাটে সদরের বড়বাড়ি,আদিতমারীর কমলাবাড়িও কালীগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপক শিলা ও বৃষ্টিপাত হয়েছে। শিলাবৃষ্টি কারণে আলু,পেঁয়াজ, রসুন,গম, ভুট্টা,ইরিধান, তামাক ও আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
লালমনিরহাটের সদর উপজেলার রাজপর ইউনিয়নের কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন,এমন শিলাবৃষ্টি জীবনে দেখি নাই বাহে আলু, পিয়াজ,তামাকের এর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাঁচ বিঘার তামাক আর আলু ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে এই শিলাবৃষ্টিতে। শিলা বৃষ্টির কারনে তামাকের পাতা গুলো ফুটো ফুটো হয়ে গেছে। তাই এবার তামাকের ক্ষতি কোন ভাবেই পোশানো সম্ভব নয়।
কালীগঞ্জ উপজেলার চলবালা ইউনিয়নের কৃষক শাহজাহান আলী জানান,জমিতে আলু লাগাইছি এই শিলা বৃষ্টিতে আলুর ক্ষতি হয়েছে। আলু আবাদে যে টাকা ব্যয় হয়েছে এই শিলা বৃষ্টির কারনে আলুতে এখন সে টাকা উঠবে না। সব আলু পঁচে নষ্ট হয়ে যাবে।
আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ী ইউনিয়নের কৃষক বাহার উদ্দিন জানান, বিকেল থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হয়েছিল। সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ দমকা ঝড়ো হাওয়া বইতে থাকে। এর একটু পরেই শুরু হয় প্রচুর শিলা বৃষ্টি। এতে বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা কৃষি অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামীম আশরাফ জানান, সদর উপজেলায় ও কালীগঞ্জ উপজেলাসহ বেশ কিছু স্থানে প্রচুর শিলা বৃষ্টি হয়েছে। এতে আলু, ভুট্টা, পিয়াজ, রসুন, মরিচ, তামাকসহ কৃষি ফসলের বেশ ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ এখন বলা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, উপজেলা কৃষি উপ-সহকারিগণ কৃষকের ফসলের ক্ষতির পরিমাণ এর তালিকা তৈরি করছে। তালিকা হাতে পেলে ক্ষতির পরিমান জানাতে পারবো।