কিশোরগঞ্জ

শিকড় ক্লাব ও মানুষের পাঠানো সহায়তায় গবাদিপশু পেল বিধবা নারী

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে সাহেবের চর গ্রামের হজরত সুলু শাহ(রঃ)এর মাজার সংলগ্ন অসহায় বিধবা নাছিমার পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হল অনুদানের ছাগলসহ চাল, ডাল প্রভৃতি।

রোববার (১৩ নভেম্বর) সকালে অসহায় নাছিমার হাতে শিকড় ক্লাবসহ বিভিন্ন জনের পাঠানো অনুদানের টাকা দিয়ে কিনে দেয়া হল, ছোট বড় মিলিয়ে ৫টা ছাগল, বড় ৩টা মাদী ছাগল, আর ছোট ২টা খাসি ছাগল ও নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার চাল,ডাল ইত্যাদি। তুলে দেন শিকড় ক্লাবের উপদেষ্টা আব্দুল কাদির শেখ(মাষ্টার)

এসময় উপস্থিত ছিলেন, সাংবাদিক এস এম মিজানুর রহমান মামুন, শিকড় ক্লাবের উপদেষ্টা নাজমুল আলম পলাশ, সাংবাদিক মাহফুজ রাজা,সমাজ সেবক আলমগীর হোসেন নাঈম,স্থানীয় আব্দুল মজিদ খাঁ,আয়াত আলী খাঁ,খাইরুল ইসলাম খাঁ, শিকড় ক্লাবের সদস্য আনোয়ার হোসেন রবিন,সজিব,মারুফ,নাবিল,এয়াসিন।
অভি,রাতুল,পলাশ,স্থানীয় সিমন খাঁসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

জানা যায়,স্থানীয় যুবক সিমন খাঁর বরাত দিয়ে জানতে পেরে সাংবাদিক এস এম মিজানুর রহমান মামুন, সাংবাদিক মাহফুজ রাজাসহ কয়েকজনকে সাথে নিয়ে সরেজমিনে দেখতে পান নাছিমার পরিবারের দুঃখ্য দূর্দশা। পরে তিনি ফেজবুক লাইভে বারবার আবেদন জানাতে থাকেন বিত্তবানদের দরবারে।

আরও জানা যায়,সাংবাদিক ও মানবিক ব্যক্তি এস এম মিজানুর রহমান মামুনের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ পরিবারের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন, Shikor Club -শিকড় ক্লাব এবং মুষ্টিমেয় মানবিক ব্যক্তিবর্গ।

সাংবাদিক ও মানবিক ব্যক্তি এস এম মিজানুর রহমান মামুন বলেন,সরেজমিনে সোমবার (১০ অক্টোবর) বিকালে আমি গিয়েছিলাম নাছিমার বাড়ীতে,দেখেছি পরিবারটির থাকার জন্য দরকার একটি ঘর এবং জীবনযুদ্ধে সংগ্রাম করে জীবিকা নির্বাহ করে চলার জন্য দরকার গৃহপালিত গবাদিপশু।

তিনি আরও বলেন, মুটামুটি ভাবে শিকড় ক্লাবের বড় একটা অংশগ্রহণসহ বিভিন্ন মানবিক মনের মানুষের সহায়তায় ছাগলগুলি কিনে দিতে পেরেছি,এখন একটি থাকার ঘরের ব্যবস্থা হলে হয়তো মহান আল্লাহর ইচ্ছায় সন্তানাদি নিয়ে নাছিমার পরিবারটি সমাজে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে।আমি মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই,এবং ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই শিকড় ক্লাবসহ সকল মানবিক মানুষদের, যারা নাছিমার জীবনযুদ্ধে সামিল হয়েছেন।অন্যদিকে আসন্ন কাতার বিশ্ব কাপ ফুটবল ঘিরে অনেকেই জায়গা জমি বিক্রি করে বিভিন্ন দলের পতাকা বানাচ্ছেন, এবং নিজের কষ্টার্জিত টাকা নষ্ট করছেন, তারা যদি অন্তত আশপাশের এমন অসহায় মানুষগুলির পাশে দাঁড়ান তাহলে পরলৌকিক বড় একটা সুফল পেতে পারেন পাশাপাশি বহু পরিবার নিতে পারে বেঁচে থাকার সুস্থ নিশ্বাস।তাদের প্রতি আহবান আসোন মানবতার পাশে দাঁড়াই।

স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার কামরুজ্জামান কাঞ্চন জানান,আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছি যখন জানতে পারি নাছিমার পরিবারটিকে গবাদিপশু কিনে দেয়া হয়েছে।ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই এ পরিবারের পাশে দাঁড়ানো মানবিক সংগঠন ও মানবিক ব্যক্তিবর্গের প্রতি। আমিও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে আসা সর্বোচ্চ সেবা দিতে চেষ্টা করবো।ব্যক্তিগত ভাবেও চেষ্টা করব কিছু করতে।

উল্লেখ্য, উপজেলার সাহেবের চর গ্রামের বিধবা মোছাঃ নাছিমা খাতুন (৪৫), ব্রহ্মপুত্র নদী ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারিয়েছেন,স্টোক জনিত কারণে হারিয়েছেন ২০২০ সালে স্বামী। ৩ কন্যা সন্তান নিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় চলে বিধবা নাছিমার সংসার। জায়গা-জমি ভিটেমাটি বলতে কিছুই নেই। পরের জায়গায় আশ্র‍য় নিয়ে একচালা একটি ঘরে জীর্ণশীর্ণ ভাবে ওদের বসবাস। এলাকাবাসীর সহযোগীতায় চলছে সংসারের খরচ এবং ৩টা মেয়ের লেখাপড়া। এ পরিবারের ৩ মেয়ের মধ্যে বড় মেয়েটা বিবাহ উপযোগী, মেজো মেয়ে ৭ম শ্রেণীতে এবং ছোট মেয়েটা ২য় শ্রেণীতে পড়ে।

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker