ফরিদপুরের মধুখালীতে শ্রেণিকক্ষে আটকে বাবা ও ছেলেকে অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত আরো চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার (২৭ মার্চ) পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার দুপুরে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো: শাহজাহান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মধুখালীর জাহাপুর ইউনিয়নের মাঝকান্দি গ্রামের আসাদুল মোল্লার ছেলে ফরমান মোল্লার (২১), একই গ্রামের শাজাহান মোল্লার ছেলে সজিব মোল্লা (২২), শিবরামপুর গ্রামের নবিয়াল শেখের ছেলে জুবায়ের শেখ (২০) ও নূর ইসলাম ভূঁইয়ার ছেলে হাসিব ভূঁইয়া (২০)।
পুলিশ সুপার মো: শাহজাহান বলেন, তাদের নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এর আগে ওই মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। যদিও তাদের মধ্যে দুজন জামিনে বেরিয়ে এসেছেন। তবে মামলার প্রধান আসামি কুতুবউদ্দিন এখনও জেলে রয়েছেন। আমরা প্রথম থেকেই এ ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করেছি।
পুলিশ সুপার মো: শাহজাহান বলেন, গত তিন মাস আগে ওই শিশুটি (৯) আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হলে নিঃসন্তান স্কুলশিক্ষিকা ইসরাত জাহান তাকে খুব আদর করতেন। শিশুটি জন্মের সময় তার মাকে হারিয়েছে। এজন্য তার প্রতি শিক্ষিকার মমতা তৈরি হয়। মাঝেমধ্যে ওই শিক্ষিকা শিশুটির বাবা ও সৎ ভাইকে না জানিয়ে তাকে ফরিদপুরের বাসায় নিয়ে রাখতেন। এ বিষয়টি শিশুটির বাবা ও ভাই মেনে নিতে পারেনি।
গত ১৭ মার্চ শিশুটিকে শিক্ষিকার ফরিদপুরের বাসা থেকে ফিরিয়ে দেওয়ার নাম করে ওই শিক্ষিকা শিশুটির বাবা ও ভাইকে আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডেকে আনেন। এরপর এক নারীসহ স্থানীয় কিছু ব্যক্তি বাবা ও ছেলেকে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে আটকে নির্যাতন করে। নির্যাতনের একটি ভিডিও গত ২৫ মার্চ রাতে ভাইরাল হওয়ায় বিষয়টি সকলের নজরে আসে।
বাবা ও ভাইয়ের বিরুদ্ধে শিশুটির করা অভিযোগও স্কুল শিক্ষিকার চাপে ছিল বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। টাকার লোভে শিক্ষিকার শিখিয়ে দেওয়া কথাই বলে।
পুলিশ সুপার বলেন, ওই শিশুটিকে যা শিখিয়ে দেওয়া হয়েছিল প্রথমে তাই বলেছে। পরবর্তীতে সত্য কথা বলেছে। পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে শিশুটি তার বাবা ও ভাইয়ের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হয়নি, বরং শিশুটিকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করতে এ নাটক সাজিয়েছেন ওই স্কুলশিক্ষিকা।
গত ১৭ মার্চ মধুখালীর জাহাপুর ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীর বাবা ও ভাইকে আটকে নির্যাতন করা হয়। এরপর নির্যাতনের ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় উঠে। ওই ভিডিওতে মাঝকান্দির নাজিম উদ্দিনের মেয়ে রুমার নেতৃত্বে পাশবিক নির্যাতনের ভয়াবহতা ফুটে উঠে।
এ ঘটনায় মারধারের শিকার ইয়ামিন বাদী হয়ে ২০ মার্চ থানায় মামলা করেন। এতে কুতুবউদ্দিন, ফয়সাল ও জহিরুলের নামসহ অজ্ঞাত ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.