আন্তর্জাতিক

পর্বতারোহীর সংখ্যা কমাতে নেপালের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ

নেপালের সুপ্রিম কোর্ট দেশটির সরকারকে এভারেস্ট ও অন্যান্য শৃঙ্গের জন্য জারি করা পর্বতারোহণের অনুমতির সংখ্যা সীমিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। একজন আইনজীবী শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে এএফপি রবিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।

গণমাধ্যমটি বলেছে, এপ্রিলের শেষের দিকে রায়টি ঘোষণা হলেও এর সারসংক্ষেপ এই সপ্তাহে প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্বের ১০টি সর্বোচ্চ শৃঙ্গের মধ্যে আটটিই হিমালয় প্রজাতন্ত্রে অবস্থিত।

প্রতি বসন্তে শত শত অভিযাত্রী দেশটিতে ভিড় করে, যখন তাপমাত্রা উষ্ণ থাকে এবং বাতাস সাধারণত শান্ত থাকে। 

আইনজীবী দীপক বিক্রম মিশ্র এএফপিকে বলেন, আদালত নেপালের পাহাড় ও এর পরিবেশ সম্পর্কে জনসাধারণের উদ্বেগের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। পারমিট কমানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি একটি আবেদন দাখিল করেছিলেন। তিনি আরো বলেন, ‘পর্বতারোহীদের সংখ্যা সীমাবদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে…এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পর্বতের পরিবেশ সংরক্ষণের জন্যও আদেশ দেওয়া হয়েছে।

রায়ের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, পাহাড়ের ক্ষমতাকে ‘সম্মান করা উচিত’ এবং উপযুক্ত সর্বোচ্চসংখ্যক পারমিট নির্ধারণ করা উচিত। রায়ের সম্পূর্ণ পাঠ্য প্রকাশ করা হয়নি এবং সারাংশে জারি করা অনুমতির সংখ্যার কোনো নির্দিষ্ট সীমা উল্লেখ করা হয়নি।

এএফপির তথ্য অনুসারে, বর্তমানে যারা আবেদন করেন এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৯ হাজার ৩২ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টে চড়ার জন্য ১১ হাজার ডলার দিতে ইচ্ছুক, তাদের সবাইকে নেপাল অনুমতি দেয়। গত বছর দেশটি এভারেস্টের জন্য রেকর্ড ৪৭৮টি পারমিট জারি করেছিল।

২০১৯ সালে এভারেস্টে পর্বতারোহী দলগুলোকে হিমাঙ্কের নিচের তাপমাত্রায় চূড়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে বাধ্য করেছিল। এতে অক্সিজেনের মাত্রা হ্রাসের ঝুঁকি ছিল, যা অসুস্থতা ও ক্লান্তির কারণ হতে পারে। সে বছর সর্বোচ্চ ১১টি মৃত্যুর মধ্যে অন্তত চারটির জন্য অতিরিক্ত ভিড়কে দায়ী করা হয়েছিল।

মিশ্র বলেন, ‘আমরা পর্বতকে খুব বেশি চাপ দিচ্ছি এবং আমাদের এটিকে কিছুটা অবকাশ দেওয়া দরকার।’

এদিকে আদালতের সিদ্ধান্তে শুধু জরুরি উদ্ধারকাজে হেলিকপ্টার ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমটি জানিয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হেলিকপ্টারগুলো প্রায়ই পর্বতারোহণকারী দলগুলোকে বেস ক্যাম্পে ও বিপজ্জনক ভূখণ্ডজুড়ে পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে।

নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নিমা নুরু শেরপার মতে, অংশীদারদের সঙ্গে যথাযথ সমীক্ষা ও পরামর্শের পর এই জাতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। তিনি বলেন, ‘এটি (রায়) কিভাবে শিল্পে প্রভাব ফেলবে তা এখনই পরিষ্কার নয়। আমরা জানি না কিসের ভিত্তিতে সীমা তৈরি করা হবে এবং কিভাবে এটি অভিযান পরিচালনাকারীদের মধ্যে ভাগ করা হবে। পরিবর্তে আমরা কিভাবে পাহাড় নিরাপদ করতে পারি সেটির ওপর আমাদের মনোযোগ থাকা উচিত।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেপাল চলতি বছর এ পর্যন্ত ৯৪৫ পর্বতারোহীলে পারমিট দিয়েছে, যার মধ্যে ৪০৩ জন এভারেস্টে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছেন।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker