বাণিজ্য

ফেব্রুয়ারিতে চালু হচ্ছে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল

অবশেষ আগামী ফেব্রুয়ারিতে চালু হচ্ছে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি)। এক বছর আগে চট্টগ্রাম বন্দরে নির্মিত এই টার্মিনাল গতকাল মঙ্গলবার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে পিসিটির কার্যক্রম শুরু করবে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান রেড সি গেটওয়ে। এরপর দ্রুত সময়ে জাহাজ থেকে কনটেইনার পরিবহন করা সম্ভব হবে।

ফলে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস খরচও কমে আসবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘চলতি বছরের ডিসেম্বরের শুরুতেই সৌদি কম্পানি রেড সি গেটওয়েকে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের দায়িত্বভার বুঝিয়ে দেওয়া হবে। আমরা আশা করছি, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতেই রেড সি গেটওয়ে তাদের কার্যক্রম শুরু করতে পারবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বহির্নোঙরে আসা মাদার ভেসেলকে (বড় জাহাজ) চট্টগ্রাম বন্দরের মূল জেটিতে পৌঁছতে অতিক্রম করতে হয় ১২ নটিক্যাল মাইল।

কিন্তু পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে পৌঁছতে সময় লাগবে ছয় নটিক্যাল মাইল। অর্ধেক নটিক্যাল মাইল কমে আসবে। আর জাহাজ থেকে পণ্য খালাস হবে আরো দ্রুত। এই টার্মিনাল চালু হলে লাভবান হবেন ব্যবসায়ীরা।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে এক হাজার ২৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের মূল অংশ থেকে ভাটির দিকে বঙ্গোপসাগর ও কর্ণফুলী নদীর মোহনায় ড্রাইডক ও বোটক্লাবের মাঝে ২৬ একর জায়গাজুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নবনির্মিত পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের অপারেশনের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য সব দাপ্তরিক কাজ শেষে করেছে সৌদি কম্পানি রেড সি গেটওয়ের সঙ্গে। এই কাজ করতে ২০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। ২০ মিলিয়ন ডলারের বাইরেও বার্ষিক আড়াই লাখ ডলার দিতে হবে বন্দর কর্তৃপক্ষকে।

এ ছাড়া হ্যান্ডলিং করা প্রতিটি কনটেইনারের বিপরীতে একটি নির্দিষ্ট ফি দেবে প্রতিষ্ঠানটি। তবে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে প্রতি কনটেইনারে কত টাকা দেবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। প্রতিবছর ২.৪ শতাংশ হারে বাড়ানো হবে এই ফির পরিমাণ। অপারেশনের দায়িত্ব পাওয়ার পর সৌদি আরবভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি আগামী ২২ বছরের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালটি পরিচালনা করবে।

৫৮৪ মিটার লম্বা এই টার্মিনালে তিনটি জেটি আছে। তিনটিতেই একযোগে জাহাজ প্রবেশ করতে পারবে। চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বোচ্চ ৯.৫ মিটার গভীরতার (জাহাজের নিচের অংশ) জাহাজ প্রবেশ করেছে। কিন্তু পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ প্রবেশের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া বছরে সাড়ে চার লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সুবিধা রাখা হয়েছে এই জেটিতে।

চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহায়েল বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে এখন পর্যন্ত যত টার্মিনাল হয়েছে, তার মধ্যে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল সবচেয়ে স্মার্ট ও মডার্ন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।’

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker