ঈদের ছুটিতে ১০ দিন বন্ধ থাকবে বেনাপোল স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের বৃহত্তম বেনাপোল স্থলবন্দরে টানা ১০ দিন আমদানি-রপ্তানিসহ বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এই সময়ে পাসপোর্টধারী যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে টানা ১০ দিন বন্ধ থাকবে দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানিসহ বন্দরের কার্যক্রম। মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান।
সাজেদুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার (৫ জুন) থেকে শনিবার (১৪ জুন) টানা ১০ দিন এ বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমসহ কাস্টমস ও বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এরপর ১৫ জুন সকাল থেকে আমদানি-রপ্তানিসহ কাস্টমস ও বন্দরের কার্যক্রম সচল হবে। তবে বুধবার (৪ জুন) বিকেল থেকে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাবে।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, ঈদুল আজহার ছুটিতে সরকারিভাবে ১০ দিন ছুটি ঘোষণা করা হলেও বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে। ১৫ জুন সকাল থেকে পূর্বের ন্যায় এ পথে আমদানি-রপ্তানিসহ পণ্য খালাস কার্যক্রম চলবে। তবে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পাসপোর্টযাত্রী চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।
এদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক আদেশে জানিয়েছে, দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য নিরবচ্ছিন্ন রাখার অভিপ্রায়ে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৫-১৪ জুন পর্যন্ত (ঈদের দিন ছাড়া) সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত কার্যক্রম সীমিত আকারে চলমান রাখার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। ঈদের ছুটিতেও খোলা থাকবে সব কাস্টমস হাউস ও শুল্ক স্টেশনগুলো। তবে এই আদেশ কতটা কার্যকর হবে সে নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বন্দর ব্যবহারকারীসহ ব্যবসায়ীরা। ঈদের আগে-পরে ছয়দিন পণ্য পরিবহনের ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকবে। ব্যবসায়ী ও দোকানের শ্রমিকরা গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যাবেন এবং এ সময় কোনো পণ্য ডেলিভারি নেবেন না বলে জানা গেছে।
বন্দর ব্যবহারকারী সূত্রে জানা যায়, দেশে চলমান ১২টি স্থলবন্দরের মধ্যে বেনাপোল স্থলবন্দর সবচেয়ে বড় এবং বেশি রাজস্ব আদায়কারী। স্থলপথে যে পণ্য আমদানি হয়, তার ৯০ শতাংশ এই বন্দর দিয়ে হয়ে থাকে। প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে চারশো থেকে সাড়ে চারশো ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে থাকে। প্রতিবছর এ বন্দর থেকে সরকারের প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আসে। এমনিতেই বন্দরে পণ্যজট লেগেই আছে। একটানা ১০ দিন বন্ধ থাকার পর আমদানি-রপ্তানি চালু হলে ব্যাপক পণ্যজট সৃষ্টি হবে। আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানেও এর প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মো. শামীম হোসেন জানান, ঈদের ছুটির মধ্যে বন্দরে যাতে কোনো ধরনের নাশকতামূলক বা অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী ও আনসার সদস্যরা দিনে রাতে বন্দর এলাকায় টহল দেবেন। পাশাপাশি বেনাপোল পোর্ট থানা কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, ঈদের ছুটির মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য খালাস নিতে চাইলে তা প্রদান করা হবে।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল মিয়া বলেন, ঈদের ছুটির মধ্যে বন্দর এলাকায় যাতে কোনো অপ্রীতিকর ও দুর্ঘটনা না ঘটে সে জন্য বিশেষ নজরদারি নেওয়া হয়েছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইব্রাহিম আহমেদ জানান, পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও স্বাভাবিক থাকবে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত। এসময় একটু বেশি ভিড় হয়ে থাকে, সে কারণে ইমিগ্রেশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে।