ঠাকুরগাঁও

টেনিংয়ের নামে অর্থ আদায়: প্রশিক্ষক অবরুদ্ধ

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে বিনামুল্যে তরুণ-তরুনীদের প্রোফেশনাল আইটি ট্রেনিং এর নামে ২৬২ জনের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ১০৫ টাকা আদায় করায় প্রশিক্ষণ প্রদানকারী আনোয়ারা বাকি পরিবারের প্রশিক্ষক আব্দুর রহিমকে শনিবার সকালে পৌর অডিটোরিয়ামে অবরুদ্ধ করে প্রশিক্ষনার্থীরা। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলেও আদায় করা অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।

আরো পড়ুন: হিরো আলমকে উপহার দিলেন ডিবি প্রধান

জানা যায়, আনোয়ারা বাকি নামে একটি সংগঠন সামাজিক গবেষনা জরিপ কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে বিনামুল্যে তরুণ-তরুনীদের মাঝে ১৫টি সফটওয়্যার ধারণা, ৭টি সফটওয়্যার, ১৩টি পিডিএফ বই এবং ২টি সফটওয়্যার লেসন ফাইল প্রদানে লক্ষ্যে পীরগঞ্জ পৌর অডিটোরিয়ামে ৩ দিন ব্যাপী প্রোফেশনাল আইটি ট্রেনিং এর আয়োজন করেন। বৃহস্পতিবার প্রশিক্ষন শুরু হয়। ২৬২ জন প্রশিক্ষণার্থী এতে অংশ নেয়। এর আগে জানানো হয় প্রতি জন প্রশিক্ষণার্থীকে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ৪০০ ডলার সম-মুল্যের উপকরণ সরবরাহ করা হবে। বিনামুল্যে প্রশিক্ষণের কথা বলা হলেও ৪০০ ডলার সম মুল্যের উপকরণ সরবরাহের কথা বলে প্রতিজন প্রশিক্ষণার্থীর কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ১০৫ টাকা করে আদায় করেন আনোয়ারা বাকি পরিবারের নির্বাহী সদস্য ও প্রশিক্ষক আব্দুর রহিম। ৪০০ ডলার সম মুল্যের পণ্যের লোভে প্রশিক্ষণার্থীরাও বিকাশের মাধ্যমে টাকা প্রদান করেন। প্রশিক্ষণের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার আইটি বিষয়ে কোন প্রশিক্ষণ না দিয়ে হিরো আলম এবং কেজিএফ-২ মুভির গল্প শুনিয়ে সময় পার করেন প্রশিক্ষক আব্দুর রহিম। ২য় দিন শুক্রবার প্রশিক্ষনার্থীরা ট্রেনিং বিষয়ে জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দেননি প্রশিক্ষক। এতে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সন্দেহ দেখা দেয়। ৩য় দিন শনিবার সকালে প্রশিক্ষণার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রশিক্ষক আব্দুর রহিমকে পৌর অডিটোরিয়ামে অবরুদ্ধ করে। এতে বিশৃংখল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার নজির, থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম, মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকরামুল হকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রশিক্ষণার্থীদের কথা শুনে এবং তাদের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে গ্রহণ করা টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন। এ সময় প্রশিক্ষক আব্দুর রহিম টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য সময় চান। এতে প্রশিক্ষাণার্থীরা বিরক্ত হয়ে ওই টাকা ফেরত দিতে হবে না বলে জানান এবং রমজানের ফেতরা হিসেবে দান করা হল- উল্লেখ করে পৌর অডিটোরিয়াম ত্যাগ করে চলে যান।

আরো পড়ুন: শার্শায় ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ

সুত্র জানায়, ৪০০ ডলার সম-মুল্যের পণ্যের প্রলোভন দেখিয়ে আব্দুর রহিম উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে আরো প্রায় দুই হাজার জনের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ১০৫ টাকা করে গ্রহণ করেছেন। তবে তাদের প্রশিক্ষণের তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। আব্দুর রহিমের বাড়ি পীরগঞ্জ উপজেলার জাবরহাট গ্রামে।

এ বিষয়ে প্রশিক্ষক আব্দুর রহিম বলেন, একটু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। এখান থেকে আমারও শিক্ষা হল। বিকাশে টাকা নেয়াটা বাধ্যতামুলক ছিল না। ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণ শুরু করার আগে চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে প্রশিক্ষাণার্থীদের সাথে কথা বলে নিবো। যেন ভুল বুঝাবুঝি না হয়।

আরো পড়ুন: ময়লার ভাগাড়ে মিললো নবজাতকের মরদেহ

পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকরামুল হক বলেন, জেলা প্রশাসকের চিঠি মোতাবেক পৌরসভা ট্রেনিংয়ে সহায়তা করেছে মাত্র। এতকিছু তিনি জানেন না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার নজির বলেন, প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প নেই। তবে এ ক্ষেত্রে নিয়মের কিছু ব্যত্যয় হয়েছে। প্রশিক্ষণার্থীদের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য বলা হয়েছিল। পরে প্রশিক্ষণার্থীরা নিজেরাই মাফ করে দিয়েছেন।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker