ফুটবল

বেলিংহ্যাম ম্যাজিকের পর কেইনের গোলে শেষ আটে ইংল্যান্ড

প্রথমার্ধে গোল হজম করে ইংল্যান্ড হেরে বিদায়ের দুঃস্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল। কিন্তু ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে বাজিমাত করেন জুড বেলিংহ্যাম। ত্রাতা হয়ে চোখ ধাঁধানো এক গোলে থ্রি লায়ন্সদের সমতায় ফেরান। পরে অতিরিক্ত সময়ে হ্যারি কেইনের গোলে এগিয়ে যায় সাউথগেটের শিষ্যরা। একস্ট্রা টাইমে গড়ানো ম্যাচে স্লোভাকিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ড।

রোববার (৩০ জুন) জার্মানির পশ্চিমের শহর গেলসেনকিরশেনে স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামে আসরের হট ফেভারিট দল ইংল্যান্ড। ইংলিশদের চমকে দিয়ে ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে লিড নেয়ার খুব কাছে ছিল স্লোভাকিয়া। হারাসলিন বাঁ দিক থেকে বক্সে ঢুকে লক্ষ্যে শট নেন। ইংলিশ কিপার জর্ডান পিকফোর্ডের নাগালের বাইরে দিয়ে যায় বল। কিন্তু একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দূরের পোস্ট ঘেষে মাঠের বাইরে চলে যায় বল।

ম্যাচের নবম মিনিটে উল্লেখযোগ্য সুযাগ পায় ইংল্যান্ড। ডান থেকে আক্রমণে গিয়ে জুড বেলিংহ্যাম বল বাড়ান বাঁ দিকে ট্রিপিয়ারের উদ্দেশে। কিন্তু দারুণ বল পেয়েও গোলপোস্টের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন ইংলিশ লেফট ব্যাক। ২৩তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো তারা। বক্সে ফোডেনকে বল বাড়ান বেলিংহ্যাম। সেখান থেকে ট্রিপিয়ার ক্রস বাড়ান কেইনের উদ্দেশে। বায়ার্ন স্ট্রাইকার অবশ্য পোস্টের বাইরে দিয়ে উড়িয়ে মারেন।

আক্রমণে নির্বিষ ইংল্যান্ড রক্ষণেও ছন্দ হারায়। ২৫ মিনিটে তার মাশুল গোনে গতবারের রানার্সআপরা। তাদের এক ডিফেন্ডার বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে ডেভিড স্ট্রেলেকের পায়ে দেন। স্লোভাক স্ট্রাইকার ইংল্যান্ডের রক্ষণ চিড়ে পাস দেন। ইভান স্ক্রাঞ্জ সাইডফুটে পিকফোর্ডকে পরাস্ত করে জাল কাঁপান। তৃতীয় গোলে জার্মানির জামাল মুসিয়ালা ও জর্জিয়ার জর্জেস মিকাউতাদজের সঙ্গে যৌথভাবে এই আসরের শীর্ষ গোলদাতা হন তিনি। 

গোল হজম করে সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে ইংল্যান্ড। ৩৯তম মিনিটে সুযোগও পায় তারা। ফোডেনের নেয়া ফ্রি-কিক প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে ট্রিপিয়ারের কাছে চলে যায়। এই লেফট ব্যাক ডেকলান রাইসের উদ্দেশে বল বাড়ান। তবে আর্সেনাল মিডফিল্ডার ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি। ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় ইংলিশরা।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে তুলনামূলক ভালো খেলে ইংল্যান্ড। ৪৯তম মিনিটে স্লোভাকিয়ার জালে বল পাঠান ফিল ফোডেন, কিন্তু ভিএআরে অফসাইডের কারণে গোল মেলেনি। রক্ষণে মনোযোগ দেয়া স্লোভাকিয়ার ওপর চাপ ধরে রাখলেও গোলরক্ষকের পরীক্ষা নিতে পারছিলেন না ফোডেন-কেইনরা।

৮১তম মিনিটে অল্পের জন্য গোল পায়নি সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ২০ গজ দূর থেকে ডেকলান রাইসের শট পোস্টে লাগে। ফিরতি বল উড়িয়ে মারেন কেইন। বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে, ছয় মিনিট যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে বেলিংহ্যামের ওই গোলে টিকে থাকে ইংল্যান্ড। ওয়াকারের লম্বা থ্রো থেকে উড়ে আসা বল প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের মাথায় লেগে বক্সে থাকা বেলিংহ্যামের দারুণ এক বাইসাইকেল কিকে জালে জড়ায়। এই গোলেই ড্র নিয়ে নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ করে দু’দল।

অতিরিক্ত সময়ের প্রথম মিনিটে আবার উল্লাসে মেতে ওঠে ইংল্যান্ডের সমর্থকরা। দলকে এগিয়ে নেন কেইন। বক্সে ইভান টনির হেড পাসে হেডেই বল জালে পাঠান ইংল্যান্ডের রেকর্ড স্কোরার। ১০৫তম মিনিটে একটি সুযোগ পায় স্লোভাকিয়া। তবে কাছ থেকে ঠিকমতো শট নিতে পারেননি পেতার পেকারিক।

এরপর বেলিংহ্যাম ও কেইনকে তুলে নিয়ে রক্ষণে শক্তি বাড়ান ইংল্যান্ড কোচ। বেশিরভাগ সময় খেলা হতে থাকে ইংল্যান্ডের অর্ধে, তবে স্লোভাকিয়া পারেনি ম্যাচে ফিরতে। শেষ বাঁশি বাজতেই হতাশায় মাঠে শুয়ে পড়েন তাদের অনেক ফুটবলার, ইংল্যান্ড শিবিরে তখন টিকে থাকার স্বস্তি। সেমি-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে সুইজারল্যান্ডের মুখোমুখি হবে গত আসরের রানার্সআপরা।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker