ম্যারাডোনা হতে গিয়ে নেইমার: ‘হ্যান্ড অব গড’ নয়, ‘হ্যান্ড অব বেইজ্জতি’!
সান্তোসের হয়ে সম্ভবত শেষ ম্যাচে নেইমারের হ্যান্ড অব বেইজ্জতি ঘটলো। হাত দিয়ে গোলের চেষ্টায় নেইমার লাল কার্ড দেখলেন এবং ভক্তদের কাছে ক্ষমা চাইলেন।
সান্তোসের হয়ে সম্ভবত নিজের শেষ ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন নেইমার। বোটাফোগোর বিপক্ষে এই ম্যাচে গোল করতে গিয়ে তিনি হাত ব্যবহার করেন, যা রেফারি দেখে সঙ্গে সঙ্গে তাকে লাল কার্ড দেখান। তার এই বিতর্কময় বিদায়ের পর সান্তোস শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা হেরে যায় ১-০ গোলে। ঘটনার পর নেইমার নিজেই ভক্তদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
বোটাফোগোর বিপক্ষে শুরু থেকেই নেইমারকে বেশ রাগান্বিত দেখা যাচ্ছিল। বোটাফোগোর সমর্থকরা একের পর এক দুয়ো দিচ্ছিলেন, যার জবাবে নেইমার বলেছিলেন, ‘আমি একটা গোল করব, তারপর ওদের সামনে যাব।’ খেলার মাঝপথে নেইমার তার সাবেক সতীর্থ জাইরের ওপর একটি ফাউল করেন, যার জন্য রেফারি তাকে হলুদ কার্ড দেখান।
এরপর ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে ঘটে বিতর্কের মূল ঘটনা। নেইমার বল জালে পাঠান, কিন্তু পা কিংবা মাথা দিয়ে নয়, হাত দিয়ে। অনেকটা ম্যারাডোনার ‘হ্যান্ড অব গড’ গোলের মতো করেই তিনি বল জালে প্রবেশ করান। ভিএআর দেখে সঙ্গে সঙ্গে সেই গোল বাতিল করে দেন রেফারি। নেইমার তখন দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন, যা লাল কার্ডে পরিণত হয়।
নেইমারের লাল কার্ডের হিসাব:
- সান্তোস ক্যারিয়ারে: পঞ্চম লাল কার্ড।
- সামগ্রিক ক্যারিয়ারে: ১৬তম লাল কার্ড।
- পিএসজির হয়ে শেষ লাল কার্ড: ২০২২ সালের ডিসেম্বরে।
এটি ছিল নেইমারের সান্তোস ক্যারিয়ারের পঞ্চম লাল কার্ড এবং ক্যারিয়ারে সবমিলিয়ে ১৬তম। পিএসজির হয়ে তিনি শেষবার লাল কার্ড দেখেছিলেন ২০২২ সালের ডিসেম্বরে।
এই লাল কার্ডের পর নেইমার নিজেই মুখ খুলেছেন। ভক্তদের কাছে ক্ষমা চেয়ে তিনি বলেন, ‘গোলের জন্য বেশি মরিয়া হয়ে গেলে কখনো কখনো আমরা ভুল করে বসি। আমি আমার সতীর্থ তো বটেই, ভক্তদের কাছেও মাফ চাইছি। আমি ভুল করে ফেলেছি, দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ যদি আমি লাল কার্ড না দেখতাম, আমি নিশ্চিত আমরা ৩ পয়েন্ট নিয়েই ম্যাচটা শেষ করতাম। আজকের ম্যাচের জন্য দলের অভিনন্দন প্রাপ্য। এই ৩টি পয়েন্ট না পাওয়ার দায় একান্তই আমার নিজের।’
ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে আর্থুরের একটি ক্রস থেকে গোল করে জয় তুলে নেয় বোটাফোগো। ফলে সান্তোসকে খালি হাতেই মাঠ ছাড়তে হয়। নেইমারের সঙ্গে সান্তোসের চুক্তি শেষ হচ্ছে আগামী ৩০ জুন। এরপর শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক ম্যাচের বিরতি ও ক্লাব বিশ্বকাপ। তাই ধারণা করা হচ্ছে, এটাই ছিল নেইমারের শেষ ম্যাচ সান্তোসের হয়ে। আর সেই ‘শেষটা’ হলো এক লাল কার্ড আর অনুশোচনার গল্প দিয়ে।