ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার পর শরীর থেকে চামড়া ছাড়িয়ে নেয়া হয়। এরপর তার দেহ কেটে ৮০ টুকুরো করা হয়। যাতে করে পরিচয় শনাক্ত না হয়। হলুদ মাখিয়ে মাংসের টুকরো প্লাস্টিকে ভরে নিয়ে কলকাতার সঞ্জীবা গার্ডেনের আলোচিত ওই ফ্ল্যাটটি থেকে নিয়ে যাওয়া হয়।
এমপি আনার হত্যায় ভারতে গ্রেফতার ‘কসাই’ জিহাদ হাওলাদার জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে এসব তথ্য জানিয়েছে বলে দেশটির গণমাধ্যমগুলো সংবাদ প্রকাশ করেছে। আর এই কাজের বিনিময়ে কসাই জিহাদ ৫ হাজার টাকা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেহ টুকরো করে নিউটাউনের ভাঙড় এলাকার নানা জায়গায় ছড়িয়ে দেয়ার কথা স্বীকার করেছে গ্রেফতার কসাই জিহাদ। লাশের টুকরোগুলো জলাশয়ে ফেলা দেয়ায় সব অংশ উদ্ধার করা কঠিন বলে মনে করছেন পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদ স্বীকার করেছে, দুই মাস আগে মুম্বাই থেকে তাকে কলকাতায় নিয়ে আসেন এমপি আনারের বন্ধু আখতারুজ্জামান শাহিন। যাকে এমপি আনার হত্যার মাস্টারমাইন্ড বলা হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার (২৪ মে) দুপুরে জিহাদকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাত জেলা ও দায়রা আদালতে তোলা হলে তাকে ১২ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদ জানায়, এই হত্যাকাণ্ডের পর বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পালানোর ছক করেছিল তারা। তার বাড়ি খুলনায় এবং অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে মুম্বাইয়ে অবস্থান করছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যান আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। পরে তার খোঁজ পাওয়া না গেলে ১৮ মে ভারতে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন এমপি আনারের পরিচিত ও ভারতের বরানগরের বাসিন্দা গোপাল বিশ্বাস। এরপর এমপি আনারের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে কলকাতা পুলিশ। কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে হত্যা করা হয়েছে বলে গত বুধবার (২২ মে) জানায় ভারতীয় পুলিশ। তারপর থেকে বেরিয়ে আসছে নানা তথ্য।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে গত বুধবার রাতে ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। মামলার এজাহারে তার মেয়ে উল্লেখ করা হয়, ৯ মে রাত ৮টার দিকে আমার বাবা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর সংসদ সদস্য ভবনের বাসা থেকে গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। ১১ মে ৪টা ৪৫ মিনিটে বাবার সঙ্গে মোবাইলে ভিডিও কলে কথা বললে বাবার কথাবার্তায় কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর বাবার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলে বন্ধ পাই। ১৩ মে আমার বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ আসে। মেসেজে লেখা ছিল, ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি আছে। আমি অমিত শাহর কাছে যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেয়ার দরকার নেই। পরে ফোন দেবো।
এই অপহরণ মামলায় গ্রেফতার তিনজনের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। গতকাল শুক্রবার (২৪ মে) বিকেলে তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। রিমান্ডে নেয়া আসামিরা হলেন আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, সিলিস্তি রহমান ও ফয়সাল আলী সাজি।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.