টাঙ্গাইলের গোপালপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিনামূল্যে বিতরণের ১০ হাজার পাঠ্যবই গায়েব হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে অনেক কোমলমতি শিশু পহেলা জানুয়ারি বই হাতে পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে বলে মনে করছেন শিক্ষকরা।
জানা যায়, উপজেলার ১৬১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৩৫ হাজার পাঠ্যবইয়ের চাহিদা পাঠানো হয়। গত ৮ ডিসেম্বর গোপালপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মর্জিনা পারভীনকে চালানমূলে এসব বই বুঝিয়ে দেন ঠিকাদার পরিবহন। কিন্তু শিক্ষা অফিসার এসব বই উপজেলা পরিষদের স্টোর রুমে না রেখে নিজ দায়িত্বে পৌর শহরের সূতি সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে রেখে দেন। সেখানে ছিল না কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা। গত ২২ ডিসেম্বর সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বই বুঝিয়ে দেওয়ার সময় গায়েব হওয়া বইয়ের বিষয়টি ধরা পড়ে। এতে দেখা যায় পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক বিজ্ঞান ৪ হাজার ৯৫০টি এবং ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা ৫ হাজার ৫০টিসহ মোট ১০ হাজার বই গায়েব হয়ে গেছে।
পাঠ্যপুস্তক গায়েব হওয়ার বিষয়ে পরিবহন ঠিকাদার সোহেল রানা জানান, চালান রশিদে স্বাক্ষর নিয়ে সকল পাঠ্যবই উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বই গায়েব হওয়ার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মর্জিনা পারভীন বলেন, ঠিকাদার বই কম দিয়েছে। এতগুলো বই এক সঙ্গে গুনে নেওয়া সম্ভব ছিল না। চালান বুঝে নেওয়ার সময় তিনি তড়িঘড়ি করে স্বাক্ষর করেছেন। তিনি জানতেন না ঠিকাদার ফাঁকি দিয়েছেন। এখন বিকল্পভাবে নানা স্থান থেকে এসব বই সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে গোপালপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মোশারফ হোসেন বলেন, বই গায়েব হওয়ার মতো চাঞ্চল্যকর ঘটনায় উপজেলা শিক্ষা অফিস তাদেরকে কিছুই জানায়নি। পুলিশ নিজ উদ্যোগে তদন্ত করে দেখবে।
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: পারভেজ মল্লিক বলেন, বই গায়েব হওয়ার খবরটি তিনি শুনেছেন। খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: আব্দুল আজিজ বলেন, দায়িত্বহীনতার জন্য তাকে শোকজ করা হয়েছে। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।