ঠাকুরগাঁও

বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ে ৯ লাখ টাকা মোহরানায়

ঠাকুরগাঁওয়ে বৃষ্টির দেখা নেই, তাই বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ে,বরের নাম মেঘ, আর কনের নাম বৃষ্টি। দু’জন মিলে মেঘ-বৃষ্টি। বিয়ে উপলক্ষে মেঘ বৃষ্টির গায়ে জড়ানো হয় নানা রঙিন কাপড়।

বুধবার (১০ মে) রাতে ছিল মেঘ-বৃষ্টির বিয়ে। আর আজ বৃহস্পতিবার ছিল বৌভাত। রঙ্গিন কাপড়ে জড়ানো ক্ষুদ্রাকার এ বর কনেকে দেখতে ভিড় জমায় হাজারো উৎসুক জনতা। তাদের  যেন আগ্রহের শেষ নেই। আর হবেই বা না কেন। এতো ব্যাঙের বিয়ে। তাও আবার বিশাল অঙ্কের মোহরানা।

ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জে ৯ লাখ নয় হাজার ৯৯৯ টাকা দেনমোহর ধার্য করে ইসলাম ধর্মের রীতিনীতি মেনেই বুধবার রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে মেঘ-বৃষ্টি নামে দুই ব্যাঙের বিয়ে দেয়া হয়েছে। নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো হয়েছে অতিথিদের।

তবে এবার এ জেলায় দিন দিন বেড়েই চলেছে তাপমাত্রা, নেই বৃষ্টি। চলছে প্রচণ্ড দাবদাহ। পুড়ছে চারদিক। নাভিশ্বাস উঠেছে জন জীবনে। খরা ও দাবদাহে ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হবে-সেই বিশ্বাস থেকেই এ বিয়ের আয়োজন।

মেঘ নামের বর ব্যাঙের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় পীরগঞ্জ উপজেলার ভাকুড়া খালপাড়ার আনিসুরের বাড়িতে, আর কনে হিসেবে বৃষ্টি ব্যাঙের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান হয় নারায়ণপুর গ্রামের আমজাদ আলীর বাড়িতে। শাড়ি, কাপড় দিয়ে সাজানো হয় বর-কনেকে। টিপ পরানো হয় ও আলতা দিয়েও সাজানো হয় কনে ব্যাঙ বৃষ্টিকে। বিকেলে গায়ে হলুদের পর্ব শেষ করে সন্ধ্যায় ভাকুড়া খালপাড়া থেকে অনুষ্ঠানিক ভাবে বরযাত্রী নিয়ে নারায়ণপুরে কনে বৃষ্টির বাড়িতে আসে বর পক্ষ। খাওয়া-দাওয়া শেষে দেনমোহর ধার্য করে বর ও কনেকে ইজাব-কবুল করান কাজল আহাম্মেদ। সম্পন্ন করা হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। ব্যাঙের এ বিয়ে দেখতে ঢল নামে নারী পুরুষের।

কনে বৃষ্টির বাবা আমজাদ আলী জানান, এ বিয়ের দেনমোহর ধার্য করা হয় নয় লাখ নয় হাজার ৯৯৯ টাকা। বিয়ে শেষে উপস্থিত লোকজনের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

স্থানীয় এক গৃহবধূ জানান, ব্যাঙের বিয়ে হচ্ছে শুনেই দেখতে আসছি। মানুষের মতো ব্যাঙের বিয়ে দেয়া তিনি এটাই প্রথম দেখেছেন। এতে তার খুব ভাল লেগেছে।

তবে অনেকেই  জানান, এটি কুসংস্কার। এমন আয়োজন এবার প্রথম দেখলাম। বিয়ের পরের দিন বৃহস্পতিবার বর মেঘের বাড়িতে আয়োজন করা বৌভাতের। নিমন্ত্রণ পেয়ে বৌভাত অনুষ্ঠানে অংশ নেন অনেক নর নারী।

এ বিষয়ে পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার নজির বলেন, লোকজ বিশ্বাস থেকে প্রবাহমান বাংলার এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker