ঠাকুরগাওয়ের পীরগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিজিবি’র গুলিতে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ ৬ জন হতাহতের ঘটনার মুল রহস্য উদঘাটনে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনসহ ৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্বারকলিপি প্রদান এবং সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যসহ উপজেলা ভুমিহীন সমন্বয় পরিষদের নেতারা। বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সকালে সিডিএ নামে একটি বে-সরকারি সংস্থার সহায়তায় এ কর্মসূচী পালন করেন তারা।
স্মারকলিপি প্রদান শেষে পীরগঞ্জ প্রেসক্লাব সভা কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় ঘিডোব জনসংগঠনের সভাপ্রধান অবিনাস চন্দ্র বলেন, গত ২৮ নভেম্বর রাতে উপজেলার খনগাও ইউনিয়নে ঘিডোব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের ফলাফলকে কেন্দ্র করে বিজিবি’র গুলিতে তার ছেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী আদিত্য বর্মন, হাবিবপুর গ্রামের সাহাবুলি আহম্মদ এবং ঘিডোব গ্রামের মোজাহারুল ইসলাম নিহত হয়। আহত হয় রহিমা বেগম, গোলাম রব্বানী ও সাইফুর রহমান নামে আরো ৩ জন।
তিনি দাবি করেন, তার ছেলে নির্দোষ। নিরাপদ দুরত্বে থাকার পরও সেদিন কি কারণে তার ছেলের পায়ে এবং মাথায় গুলি করা হল। দায় কার এবং কি অপরাধ ছিল তার ছেলের?
ছেলেকে হারিয়ে তিনি যে মানষিক ও অর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এর দায় কে নিবে? শুধু কি নিরিহ নাগরিকের উপর দায় চাপিয়ে রাষ্ট্র দায় মুক্ত থাকতে চায়। তার ছেলেসহ অন্যান্য হতাহতের ঘটনার মুল রহস্য উদঘাটনে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন তিনি। সভায় অন্যাদের মধ্যে বক্তব্য দেন, মানবাধিকার কর্মী বেলাল হোসেন, উপজেলা ভুমিহীন সমন্বয় পরিষদের সভাপ্রধান আনছারুল ইসলাম, নিহত আদিত্যের মা পার্বতী রানী, সলমন রায় প্রমুখ।
সভায় পীরগঞ্জ প্রেসক্লাবে সভাপতি জয়নালা আবেদিন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক নসরতে খোদা রান, বিভিন্ন জন সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ অন্যান্য সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে দেয়া স্মারক লিপিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সংবিধানে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে এবং সরকার সার্বজনিন মানবাধিকার ঘোষণা সনদে স্বাক্ষর করলেও এখন অধিকার বঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমরা বেশ পিছিয়ে আছি। যদিও সরকার চেষ্টা করছে। তারপরেও রাজনৈতিক স্বেচ্ছাচারিতা, দূনীতি, আইনের শাসন ব্যহত হবার কারণে প্রচেষ্টাগুলো অঙ্কুরেই বিনষ্ট হচ্ছে।
এমতাবস্থায় গত ২৮ নভেম্বর রাতে পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাঁও ইউনিয়নে ঘিডোব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে গোলা গুলির ঘটনা বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা, উপজেলা ভিত্তিক সামাজিক সম্প্রীতি সেল গঠন করে মানুষেরে জান ও মালসহ চলাফেরায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ভুমিহীনদের বাসস্থান, খাদ্য নিরাপত্তাসহ বছরে কমপক্ষে ২০০ দিনের কর্মসংস্থানের গ্যারান্টিসহ প্ররিবার প্রতি দুই একর খাস জমি বন্দোবস্ত দিয়ে মৌলিত মানবাধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয় ঐ স্মারক লিপিতে।