লালমনিরহাট

নথি জালিয়াতি করে জমি দলিল, দলিল লেখকের লাইসেন্স স্থগিত

লালমনিরহাটের আদিতমারীতে জেলা রেকর্ড রুম হতে সরবরাহকৃত বিআরএস খতিয়ানে ডিজিটাল জালিয়াতি পূর্বক মসজিদ শ্রেণীর জমি কৌশলে দলিল করে নেওয়ার অভিযোগে দলিল লেখক সাইফুল ইসলাম মন্টুর লাইসেন্স (সনদ) স্থগিত করেছেন উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার । এছাড়াও ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ মার্চ) বিকালে সাব-রেজিস্ট্রার এইচ এম মিরাজ সৌরভ দলিল লেখক মন্টুকে নোটিশ জারি করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সাইফুল ইসলাম মন্টু পিলখানা ট্রাজেডির একজন সদস্য এবং জেলও খেটেছেন। তিনি উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের বাসিন্দা। জেল থেকে বেড়িয়ে দলিল লেখক পেশায় যোগ দেন।

জানাগেছে, উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের রসুলপাড়া গ্রামের একটি জমির দলিল হয় ফেব্রুয়ারি মাসের ২২ তারিখে। যার দলিল নম্বর ১৩১৩। এতে অভিযোগ উঠে মসজিদ শ্রেণিভুক্ত জমিটির দলিল করা হয়।

এরই প্রেক্ষিতে প্রাথমিক তদন্তে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার জেলা রেকর্ড রুম থেকে সরবরাহকৃত বিআরএস খতিয়ানে ডিজিটাল জালিয়াতি ও ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ রশিদে কৌশলে দাগ নম্বর বসিয়ে দলিল করার দায়ে দলিল লেখক সাইফুল ইসলাম মন্টুকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। সেই সাথে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে এর সন্তোষজনক জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও ঘষামাজা করে ২৩২ নম্বর বিআরএস খতিয়ানের ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের রশিদ জালিয়াতি করার অভিযোগে তার দলিল লেখক লাইসেন্স (সনদ) ১২/২০১৩ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।

এদিকে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে দলিল লেখক সাইফুল ইসলাম মন্টু ক্রেতা ও বিক্রেতাকে দোষ দিয়ে বলেন, তারাই ওই দাগের খাজনার কাগজ ঘষামাজা করে জালিয়াতি করেছেন। মূল কপিতে স্ক্যানের মাধ্যমে কৌশলে মসজিদ শ্রেণিভুক্ত কাগজে ডাঙ্গা লিখে তার মাধ্যমে দলিল করিয়ে নিয়েছেন। এমনকি তারা কোন কাগজপত্র না দেখিয়ে তারাহুরা করে কাজ করেছেন। এসব বিষয় আমি উপর মহলকে অবহিত করেছি।

অপরদিকে মসজিদ শ্রেণিভুক্ত ওই দাগের জমি অনেক আগে থেকেই বাঁশঝাড় রয়েছে সেখানে কোন স্থাপনা নেই বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। সর্বশেষ ভূমি জরিপে কিভাবে মসজিদ শ্রেণিভুক্ত হলো তাও অজানা। প্রবীণ এলাকাবাসীগণ বলছেন তাদের জানামতে সেখানে কোনভাবেই কোনদিন কোন মসজিদ ছিলোনা।

এ বিষয়ে আদিতমারী উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার এইচ এম মিরাজ সৌরভ বলেন, ওই দলিল নিবন্ধনের সময় রেজিস্ট্রেশন ম্যানুয়াল ২০১৪ এর ৫২(ক) ধারা অনুযায়ী যে সব প্র‍য়োজনীয় কাগজের তৎক্ষনাৎ পর্যালোচনা পূর্বক দলিল নিবন্ধনের জন্য গ্রহণ করা হয় তার সব কাগজপত্র যথাযথ কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষরিত ছিল। তাই যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে দলিল করা হয়েছে। আর উক্ত কাগজসমুহ পরীক্ষা ও নিরীক্ষা করার জন্য আমাদের নিজস্ব কোন আরওআর (রেকর্ড অব রাইটস) না থাকায় তৎক্ষনাৎ যাচাই করা সম্ভব হয় না।

তিনি আরো বলেন, আইন অনুযায়ী, আপাত দৃষ্টিতে এজলাসে জমাকৃত কাগজপত্র একবার দেখেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ পূর্বক দলিল নিবন্ধনের জন্য গ্রহণ করা হয়। দলিল লেখক সাইফুল ইসলাম মন্টুর লাইসেন্স সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker