দিনাজপুর

বাড়ছে মাদকসেবীদের আনাগোনা, ধরাছোঁয়ার বাইরে ব্যবসায়ীরা

সীমান্তবর্তী দিনাজপুরের হিলিতে দিন দিন বাড়ছে মাদকসেবীদের আনাগোনা। হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে ফেনসিডিল, মদ, গাঁজা, ইয়াবা, হেরোইন, ট্যাপেন্ডালসহ বেশকিছু মাদকদ্রব্য। এতে এলাকায় বাড়ছে চুরির আতংক। মাদকের বিষয়ে তথ্য পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস পুলিশ কর্মকর্তার।

উত্তরের জনপদ দিনাজপুর। এ দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী উপজেলা হিলির বিভিন্ন এলাকাতে এখন হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য। প্রতিদিন ট্রেন কিংবা বাসে এভাবেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হিলিতে আসে মাদকসেবীরা। ভিক্ষাবৃত্তির পাশাপাশি চুরির মতো ঘটনা ঘটিয়ে অর্থ সংগ্রহ করে নেশা করছে এসব মাদকসেবীরা। উপজেলার বিভিন্ন পরিত্যক্ত ভবনগুলো মাদক সেবনের নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে গড়ে উঠেছে। যেখানে দিনে-দুপুরে এভাবেই প্রকাশ্যে নেশা করছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থী ও যুবসমাজ পড়েছে ঝুঁকির মুখে। ট্যাপেন্ডাল, ফেনসিডিল, গাঁজা, মদ, ইয়াবা, হেরোইন, অ্যাম্পলসহ এতো সব মাদকের ছড়াছড়িতেও নেই প্রশাসনের তৎপরতা, ধরা ছোঁয়ার বাইরে মাদক ব্যবসায়ীরা।

হিলি স্টেশন ও চুড়িপট্টি এলাকায় কথা হয় কয়েকজন মাদকসেবীর সঙ্গে। তারা বলেন, তারা এসেছেন রংপুর, জয়পুরহাট, পাঁচবিবি, বিরামপুরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে। মাদকসেবীরা কখনও ট্রেন, কখনও বাসে করে হিলিতে আসেন মাদক সেবন করতে। টাকার প্রয়োজনে তারা বিভিন্ন সময় ভিক্ষাবৃত্তি করে থাকেন। ৩০০ টাকা দিয়ে তারা সামান্য পরিমাণ হেরোইন কিনে সেবন করেন। এ ছাড়াও হেরোইনের দাম বেশি হওয়ার কারণে অনেকেই এখন ট্যাপেন্ডাল ও অ্যাম্পল মিশিয়ে সেবন করেন। এতে করে হেরোইনের নেশা কেটে যায়। অনেকেই আবার মাদকসেবন থেকে মুক্তি পেতে চায়। যদি প্রশাসন তাদেরকে একটি কাজের ব্যবস্থা করে দেয়, তাহলে তারা মাদক সেবন থেকে বিরত থেকে ভাল জীবনে ফিরতে পারতেন।

অনেক সময় পুলিশ তাদের আটক করলেও লাঠি দিয়ে আঘাত করে ছেড়ে দেন বলেও জানান তারা।

হিলি নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ও হাকিমপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, ‘উপজেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে বার বার আলোচনা করলেও পুলিশ প্রশাসন আমাদের কোনো কথার গুরুত্ব দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। পুলিশের তৎপরতা না থাকায় দিন দিন হিলিতে বাড়ছে মাদকের প্রবণতা। এতে করে যুবক এবং শিক্ষার্থীরা মাদকের দিকে ধাবিত হচ্ছে। আমরা হিলিবাসী সন্তানদের নিয়ে খুব আতঙ্কে আছি। যদি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করা হতো এবং হিলির যেসব স্থানে মাদক পাওয়া যায় সেসব স্থানে অভিযান পরিচালনা করে জেল-জরিমানা করা হতো তাহলে মাদক অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসতো।’

হাকিমপুর-ঘোড়াঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘মাদকের বিষয়ে নিয়মিত অভিযান চালানোর পাশাপাশি করা হচ্ছে নানান মাদকবিরোধী প্রচারণা। মাদকের সঙ্গে জড়িত সকলকেই আনা হচ্ছে আইনের আওতায়। যদি কোনো পুলিশ সদস্য এ মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জড়িত থাকেন তাহলে গোপনে জানানোর জন্য অনুরোধ করছি। সেই সঙ্গে জড়িতদের বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, গেলো বছরের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত হাকিমপুর থানায় মাদক মামলা হয়েছে ১১৭টি। আর জব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য। যার মধ্যে ট্যাপেন্ডাটল ২ হাজার ৪৩২ টি, গাঁজা ৬ কেজি, ইয়াবা ২ হাজার ৮৭৩ টি, ফেনসিডিল ৪৬৫টি, কোকেন ৪ কেজি, দেশি মদ ২২ লিটার, অ্যাম্পল ১ হাজার ৯৭৯ টি, হেরোইন ৭১ গ্রাম।

জনস্বার্থে পুলিশের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

Author


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker