কটিয়াদী

কটিয়াদীতে চোখ উঠা রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি, ফার্মেসীগুলোতে ঔষধ সংকট

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলা জুড়ে চোখ উঠা রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ভীড় করছেন অনেক রোগী। এদিকে হঠাৎ এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই পর্যাপ্ত ঔষধ মিলছেনা দোকানগুলোতে। ফলে জরুরি চিকিৎসা নিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে রোগীদের। এদিকে চোখ উঠা রোগীদের সচেতন ও সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ চিকিৎসকদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত একসপ্তাহ ধরে এই রোগের প্রকোপ দেখা যায়। উপজেলা জুড়েই এমন অবস্থা দেখা দিয়েছে। প্রতিনিয়তই একি পরিবারের নতুন কারো চোখ উঠছে। পৌর এলাকা সহ গ্রামের বাজার গুলোতে মিলছেনা চাহিদামত চোখের ড্রপ।

বনগ্রাম ইউপির নাগেরগাও গ্রামের জসিম উদ্দিন বলেন, আমার পরিবারে প্রথমে একজনের চোখ উঠার পর পর্যায়ক্রমে আরো দুইজন আক্রান্ত হয়’।

লোহাজুরী ইউপির বাসিন্দা ফজলুল হক কবির বলেন,’ঘুম থেকে উঠেই দেখি চোখ লাল হয়ে আছে এবং তীব্র ব্যাথা করছে। চিকিৎসকের পরামর্শে চোখের ড্রপ আনতে গিয়ে অনেক ফার্মেসী খুঁজে একটি ড্রপ পেয়েছি’।

হাসপাতাল রোডে ঔষধ মার্কেটের একাধিক ঔষধের ফার্মেসী মালিকদের সাথে কথা হয়। এর মধ্যে নাঈম মেডিকেল হল,আলতা মেডিকেল হল, গ্রীন ও সাহা ফার্মেসীর মালিকরা জানান, প্রতিদিন শতশত চোখের রোগী আসছেন। চাহিদামতো কোম্পানি গুলো চোখের ঔষধ সরবরাহ করতে পারছেনা। যা কিছু আসে তাও মুহুর্তের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

একাধিক চিকিৎসকের সাথে কথা বলে জানা যায়, চোখ ওঠলে কখনো কখনো এক চোখে অথবা দুই চোখেই জ্বালা করে এবং লাল হয়ে চোখ ফুলে যায়। চোখ জ্বলা, চুলকানি, খচখচে ভাব থাকা, চোখ থেকে পানি পড়া, চোখে বার বার সাদা ময়লা আসা, কিছু ক্ষেত্রে চোখে তীব্র ব্যথা এ রোগের অন্যতম প্রধান লক্ষণ। তারা আরো বলেন, গরমে আর বর্ষায় চোখ ওঠার প্রকোপ বাড়ে, চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটিকে কনজাংটিভাইটিস বা কনজাংটিভার বলা হয়।

তবে এ সমস্যাটি চোখ ওঠা নামেই বেশি পরিচিত। রোগটি ছোঁয়াচে ফলে দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্তদের উল্লেখযোগ্য অংশই শিশু। সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যেই এই রোগ সেরে যায়। তবে জটিল রূপ ধারণ করলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার ওপর জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এসএসএন ফারজানা আক্তার বলেন,’রোজ ৫০-৬০ জন চোখ উঠা রোগী আসছেন। সপ্তাহ আগেও এর পরিমাণ কম ছিল। তাদেরকে চশমা ব্যাবহার এবং প্রয়োজনীয় ঔষধ দেওয়া হচ্ছে’।

কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.তাজরীনা তৈয়ব বলেন,এটা সিজনাল একটি রোগ। গরমে এবং বৃষ্টিতে এই রোগ বেশি হয়। ঋতু পরিবর্তনের প্রাদুর্ভাব ভালো হয়ে যায়, এটাও তেমন এমিতেই ভালো হয়ে যায়। হাসপাতালের আই ভিশন সেন্টার থেকে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চোখ ওঠা নিশ্চিত হয়ে এন্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে। আতংকিত না হয়ে সতর্কতা ও সচেতন থাকতে হবে’।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker