কটিয়াদী

কটিয়াদীতে বঙ্গবন্ধুর স্লোগানে বাজিয়ে পতাকা বিক্রি করছেন কাদির

স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম -“এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু” স্লোগানে বাজারের মোড়ে মোড়ে বাজাচ্ছেন আর বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ও আর্দশ কে বুকে ধারন করে মহান বিজয় দিবসকে সামনে রেখে পতাকা বিক্রি করছেন বঙ্গবন্ধু প্রেমী কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলা পৌর এলাকা পূবপাড়া বাসিন্দা নৈশ্য পহরী আব্দুল কাদির। তিনি উপজেলার কটিয়াদী বাজারের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রতিদিন বাংলাদেশের পতাকা সহ বিভিন্ন পতাকা বিক্রি করেন। তবে ডিসেম্বর মাস এলে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্চে।

জানা যায়, কাদির দীর্ঘ দিন ধরে হ্যান্ড মাইক দিয়ে বিজয় দিবসের ও বঙ্গবন্ধুর গান বাজিয়ে গায়ে বঙ্গবন্ধুর কোট পড়ে কটিয়াদী বাজারসহ বিভিন্ন বাজারের অলিগলিতে পায়ে হেটে হেটে পতাকা বিক্রি করে আসছেন। প্রতিদিন বিক্রি করে যা রোজগার হয়ে থাকে তা দিয়ে ছেলে মেয়ের পড়া লেখার খরচ ও সংসারের কাজ কোন রকম চলে। বেসরকারী সংস্থার ঋণে নেয়া ভ্যানের চাকায় ঘোরে জীবনের চাকা। তিনি কটিয়াদী সাব রেজিস্ট্রি অফিসে সকাল ৯ থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত কাজ করত এরপর যা সময় পেত রাত পর্যন্ত তা পতাকা বিক্রি করতেন। সবাই সকল প্রকার সহযোগিতা পেলেও কাদির কোন উপজেলা, পৌরসভা এমন কি দলীয় ভাবে কোন অর্থনৈতিক সহযোগিতা পাননি। তার এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এক ব্যতিক্রমী ফেরিওয়ালা আব্দুল কাদির। রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব, এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ, বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ। এসব স্লোগান ছেলেবেলায় গ্রামের বাজারে মাইকে বাজানো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাতই মার্চের ভাষণ দারূণভাবে নাড়া দেয় তাকে। এ যেন সাধারণের মাঝে বেঁচে থাকা অসাধারণ বঙ্গবন্ধু। এসব কাজে প্রতিবেশীরা একসময় পাগল ভাবলেও।

আ: কাদির বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাতই মার্চের ভাষণ একটা কবিতার মত। শুনলেই গা শিউরে ওঠে। এ ভাষণ সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারে, মানুষ অকাতরে জীবন দিতে পারে তারই প্রমাণ। বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করলে বাংলাদেশকে অস্বীকার করা হয়। তাই আমি বঙ্গবন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই এ ভাষণ স্বাধীনতা দিবস, শোক দিবসসহ জাতীয় দিবসগুলোতে গ্রামেগঞ্জে শুনিয়ে থাকি আর পতাকা বিক্রি করি। নিজের জমানো টাকায় কেনা পাঞ্জাবী, পাজামা আর মুজিব কোট পড়ে থাকি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে আজীবন কাজ করার প্রত্যাশা তার। তিনি আরও বলেন, আমার শেষ ইচ্চে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করতে চাই ও বঙ্গবন্ধুর ভালবাসার কথাগুলো শুনাতে চাই।

কাদিরের প্রতিবেশী ছামাদ বলেন, কাদির যখন যেখানে যেত বঙ্গবন্ধুর কোট পড়ে যেত আর তার ভালবাসার কথা, উদারতার কাথা বলত। তখন আমরাও মজা পেলেও। এখন বুঝি বঙ্গবন্ধু ও দেশের প্রতি তার ভালবাসা কতটা।

কাদিরের কন্যা জান্নাত বলেন, আমার বাবা যখন জোরে জোরে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ যখন হ্যান্ড মাইকে বাজাচ্ছিল আর পতাকা বিক্রি করতে বের হয় তখন প্রতিবেশীদের অনেকেই পাগল বলে হাসাহাসি করত। বাবা কারো কথায় কর্ণপাত করেননি। এখন আমাদের খুবই গর্ব হয়।

উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা ও মুক্তিযোদ্ধারা বলেন,বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেকেই বড় বড় কথা বলেন। কিন্তু কাদিরের মত কয়জন বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে নিজের মধ্যে ধারণ করতে পেরেছে আমার জানা নেই। একজন সাধারণ ভ্যানেকরে পতাকা বিক্রেতা কাদিরের এ কৃতিত্বে আমরা সত্যিই গর্বিত।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খানজাদা শাহরিয়ার বিন মান্নান বলেন, আমি কাদিরের মত বঙ্গবন্ধু ভক্ত এমন লোক সচরাচর পাওয়া যায়না। তার এরকম বঙ্গবন্ধুর ভালবাসা দেখে আমি খুবই মুগ্ধ। আমার হাতে কোন কিছু সহযোগিতার সুযোগসুবিধা আসলে সহযোগিতা পাবে সে।


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker