কটিয়াদী

কটিয়াদীতে সূর্যমুখী চাষে কৃষক মহরমের বাজিমাত

চারদিকে হলুদ রঙের সূর্যমুখী ফুলের মনমাতানো ঘ্রান আর মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরীত হয়ে উঠেছে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের ও ব্লকের পূর্ব চারিপাড়া গ্রামের কৃষক মো: মহরম আলীর ফসলের মাঠ। ভোর হলেই সোনা রোদে চোখ মেলে ঝলমলে সূর্যমুখী। সবুজ পাতার আড়ালে যেন সূর্যমুখী মুখ উচু করে আছে। এ যেন ফসলি জমি নয় এক দৃষ্টি নন্দন বাগান। এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য অবলোকনে শুধু প্রকৃতির প্রেমীই নয় যে কারো নজর কাড়বে। চোখে পড়ে শুধু সূর্যমুখী ফুল আর ফুল। এ ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য যেন সবাইকে মোহিত করে।

উপজেলা কৃষি অফিসসুত্রে জানা যায়, এবার মৌসুমে উপজেলা ১টি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নে ২৭ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। কৃষি পূনর্বাসন কর্মসূচীর আওতায় উপজেলার ২০০ জন কৃষককে ২৭ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ করার জন্য সূর্যমুখী বীজ সহায়তায় দেয়া হয়। উপজেলা কৃষি অফিস হতে সূর্যমুখী চাষাবাদ করার জন্য সকল ধরনের পরামর্শ প্রদান করে কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ব করা হয়েছে। বিঘা প্রতি সূর্যমুখী জমি থেকে প্রায় ৯-১০ মণ বীজ উৎপাদন হয়। সূর্যমুখী বাজার মূল্য মণ প্রতি ২৫০০-৩০০০টাকা। এটি চাষ করতে ১০০-১১০দিন সময় লাগে। বর্তমানে স্থানীয় কৃষকরা এক প্রকার ফসলের ক্ষেতে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে।

পূর্ব চাড়িপাড়া গ্রামের মো: মহরম আলী বলেন, আচমিতা ব্লকের উপ-সহকারী বরকত উল্লাহ পাঠান ভাইয়ের পরামর্শে প্রথমবারের মত ৩৫ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি। বীজ বিনা মূল্যে পেয়েছি। চাষাবাদে এ পর্যন্ত সকল খরচসহ ৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিক্রি হবে ৩০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত আসতে সময় লেগেছে ৮০দিন এবং আর ২৫-৩০ দিন পর ফসল কাটতে পারব।

আরেক কৃষক মো: ফরিদ মিয়া বলেন, আমি ১৮ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি। বর্তমানে ফসলের যে অবস্থা কোন প্রকার প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে ঘটলে এ মৌসুমে অন্যান্য ফসলের চেয়ে বেশী লাভবান হব। আগামী বছর ২-৩ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করব।

আচমিতা ব্লকের উপ-সহকারী বরকত উল্লাহ পাঠান বলেন, আমার ব্লকের যে সমস্ত জমিতে রোপা আমন পরবর্তী পতিত রেখে পাট চাষ করা হত,সেই পতিত জমিগুলোতে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। এতে বাড়তি একটি ফসল পাওয়া যাবে। কৃষকরা লাভবান হবেন বলে আশা করছি। সূর্যমুখী চাষ করে কৃষকরা যাতে লাভবান হতে পারে সে লক্ষ্যে আমরা নিয়মিত মাঠে কাজ করে যাচ্ছি এবং সঠিক পরামর্শ দিচ্ছি।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো: মুকশেদুল হক জানান,এ বছর কটিয়াদী উপজেলা আমরা প্রথমবারের মত সূর্যমুখী আবাদ করেছি। সরকারের কৃষি পূনর্বাসন কর্মসূচীর আওতায় আমরা কৃষকদেরকে বীজ সহায়তা দিয়েছি। সেই সহায়তায় কৃষকরা আবাদ করে সফল হয়েছে। এটি তেল ফসল এবং পাশাপাশি সৌন্দর্যের আধার। আমরা দেখেছি আমাদের প্রত্যেকটা মাঠ চমৎকার ফুলে সুসজ্জিত হয়ে আছে। সৌন্দর্য ও লাভ দুটো এক সাথেই হচ্চে। ফলনও বেশ ভাল হয়েছে। আমরা আশা করছি আগামীতে সূর্যমুখীর আবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker