সারাদেশ

সরকারি কর্মচারীরা সম্পদের হিসাব না দিলে শাস্তি

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান বলেছেন, ‘এতদিন তো অনেক কথা শুনেছেন—জিরো টলারেন্স, হাতি-ঘোড়া। এসব শুনে লাভ নেই, আমি বলতেও চাই না। যেখানে যেটা করার আমরা করতে পিছপা হবো না। সরকারের সব স্তরের কর্মচারীকে সম্পদের হিসাব দিতে হবে, যারা দেবেন না তাদেরকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।’

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘আমরা মনে করি, কীভাবে হিসাব দিতে হবে তা নির্ধারণে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও করা হয়েছে। সম্পদের হিসাব দিলে দুর্নীতি কমে আসবে। সম্পদের হিসাব বছরে একবার দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সম্পদের হিসাব জমা না দিলে কী হবে সেটা আমরা অবশ্যই বলে দেবো-দণ্ডটা কী হবে, তার বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্পদের হিসাব জমা না দিলে খবর আছে, সোজা কথা। আইনানুগ খবর আছে। খবরটা কী সেটা যখন চিঠি (ফরম) দিবো তখন বলে দেবো।’

এই সিনিয়র সচিব বলেন, ‘এতদিন তো অনেক কথা শুনেছেন—জিরো টলারেন্স, হাতি-ঘোড়া। এসব শুনে লাভ নেই, আমি বলতেও চাই না। যেখানে যেটা করার আমরা করতে পিছপা হবো না। আমাদের কোনো পাওয়ার রিসার্চ করতে হবে না। বিধি মোতাবেক কাজ করব। সাহসের সঙ্গে কাজ করব।’

মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারী রয়েছেন। আগে আমরা মনে করতাম, শুধু কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে, যারা কর দেন। কিন্তু, দেখা গেছে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী, পিয়ন অথবা ড্রাইভার ৪০০ কোটি টাকার মালিক-এ রকমও তো পাওয়া যাচ্ছে। এ জন্য আধুনিক পদ্ধতিতে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে পারে। সেজন্যই কাজটা শুরু করেছি।’

তিনি বলেন, ‘কিন্তু প্রশ্ন হলো, কবে, কে, কোথায় কীভাবে এ হিসাব দিবে? এ জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিবকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। কমিটিতে এনবিআরের একজন প্রতিনিধি, অর্থ বিভাগের একজন প্রতিনিধি, কম্পোটলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের একজন প্রতিনিধি রয়েছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা ও তদন্ত অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব এই কমিটির সদস্য সচিব থাকবেন।’

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, ‘এই কমিটি আগামী সাত দিনের মধ্যে একটি ফরমেট তৈরি করবে। ফরমটি হবে বাংলায়। এটি এক পাতার মধ্যে থাকবে। স্থাবর সম্পত্তি, অস্থাবর সম্পত্তি এবং অন্যান্য সম্পত্তি-এভাবে ফরমে থাকবে। এরপর আমরা বলে দেবো সব মন্ত্রণালয় এবং বিভাগে একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে সম্পদের হিসাব জমা দিবে। মূলত আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এটি ফাংশনাল হবে। এ সময়ের মধ্যে আমরা ফরমগুলো অফিস অফিসে পৌঁছে দেবো। আমরা তখন বলে দেবো, কোন তারিখের মধ্যে হিসাব দাখিল করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এই উদ্যোগ (সম্পদের হিসাব) নেওয়ার কারণে ইতোমধ্যে অনেকের মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ বলছেন, এতদিন দেওয়া লাগেনি কিংবা নামে একটা দিতাম খবর নেই। এবার এটা কাজ করবে। দুদক যেহেতু এটা অফিসিয়ালি হ্যান্ডেল করে, তারা এটা বিবেচনা করবে যে কার সম্পদ বিবরণীর জন্য কাকে তলব করতে হবে।’

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker