মাদারীপুর

মাদারীপুরে সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল

মাদারীপুরে প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিদ্যালয়ের মাঠে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছেন। ডনোভান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার সময়ে বিদ্যালয় মাঠে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে এ বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকেরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় গিয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র প্রদান করেন।

জেলা প্রশাসক প্রধান শিক্ষককে এক সপ্তাহের ছুটি প্রদান করেন। পরে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ভিত্তিতে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার ডনোভান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে শিক্ষর্থীরা তাকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। এ সময় তাদের সাথে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অবস্থা বেগতিক দেখে প্রধান শিক্ষক কৌশলে স্কুল থেকে সরে পড়েন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের টিফিন দেয়া বাবদ বিগত ৭ মাসে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা তুলেছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের টিফিন দেওয়া হয়েছে মাত্র ১৫ থেকে ২০ দিন। টিফিনে সিংগারা পুরি ইত্যাদি দেয়া হলেও ভাউচারে লেখা হয় বার্গার, কেক এবং স্যান্ডউইচ। তাছাড়া প্রধান শিক্ষক তার উদ্যোগে একজন লোক নিয়োগ দিয়ে তাকে দিয়ে চটপটির ব্যবসা করেন। চটপটি বিক্রির আয় ব্যয় তিনি নিজে দেখাশোনা করেন। শিক্ষার্থীদের স্কুল গেটের বাইরে যেতে দেয়া হয় না, বাধ্য হয়ে তাদের চটপটি কিনে খেতে হয়।

নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আরিফা বলেন, আমাদের ছাত্রী হোস্টেলে কোনো ছাত্রীকে থাকতে দেওয়া হয় না। প্রধান শিক্ষক তার বাসভবন অকেজো দেখিয়ে ফ্যামিলি নিয়ে ছাত্রী হোস্টেলে থাকেন। আরেকটি কক্ষতে তার চটপটি বিক্রেতাকে থাকতে দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমরা এই দুর্নীতিগ্রস্ত প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চাই।

দশম শ্রেণীর আরেক শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান বলেন, আইসিটি ল্যাব বাবদ শিক্ষার্থীদের থেকে টাকা নেওয়া হলেও শিক্ষার্থীদের আইসিটি ল্যাবে ৮ মাসেও কোনো ক্লাস নেয়া হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সহকারী শিক্ষক জানান, জেলা প্রশাসক শিক্ষার্থীদের এবং শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের অভিযোগ শুনে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করার আশ্বাস দিয়েছেন। এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত কমিটির থেকে প্রাপ্ত রিপোর্ট মন্ত্রণালয় পাঠাবেন এবং প্রধান শিক্ষককে এক সপ্তাহের ছুটি প্রদান করেছেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক আজহারুল হক বলেন, আমার বিরুদ্ধে এটা শিক্ষকদের ষড়যন্ত্র। তারা তাদের অনিয়ম ঢাকার জন্য শিক্ষার্থীদের আমাদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে। আর আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, অনিয়মের অভিযোগে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত কমিটির থেকে প্রাপ্ত রিপোর্ট মন্ত্রণালয় পাঠানো হবে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker