ভারতে খুন হওয়া এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বলেছেন, ‘আমার বাবাকে শেষবারের মতো ছুঁয়ে দেখতে চাই। একজন মানুষ মানুষকে এমনভাবে কী করে মারতে পারে। এভাবে আমার বাবাকে কেটে কেটে টুকরা করা হয়েছে, আমি জীবনেও ভুলতে পারব না।’
গতকাল শুক্রবার দুপুরে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে এমপি আনারের বাড়ির সামনে তাঁর মেয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
আনার ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনের এমপি এবং কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান আনারকন্যা ডরিন। তিনি বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যার নাম আসছে, তাকে বিদেশ থেকে নিয়ে আসেন। কান টানলে মাথা আসবে, যদি তার ওপরের কেউ থেকে থাকে তার নামটিও খতিয়ে দেখেন।
আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তদন্ত করে বিষয়টি দেখুন, রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক যেটাই হোক না কেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখেন।’
ডরিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘হত্যার পরিকল্পনাকারীকে ধরার পরই খতিয়ে দেখা যাবে আসলে কী জন্য সে এত বড় অপকর্ম ঘটাল। এর বিচার অবশ্যই হবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাবার হত্যার বিচার করেছেন; তিনি আমার বাবা হত্যার বিচারও করবেন। কারণ তিনি বাবা হারানোর ব্যথা-কষ্ট ভালো করে বোঝেন। আশা করি, তিনি এই নির্মম নিষ্ঠুরতার বিচার অবশ্যই করবেন। এ জন্য আমি আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি।’
এমপিকন্যা বলেন, ‘দিল্লি হাইকমিশনসহ সবার সঙ্গে আমার কথা হচ্ছে।
ওখানকার অনেক বড় বড় কর্মকর্তা আমাকে ফোন দিয়েছেন। তাঁরা নিজেরাই এ বিষয়টা দেখছেন। তাঁরা চেষ্টা করতেছেন কিছু না কিছু বের করবেন।’ তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের সহযোগিতায় আমার ভিসা হয়ে গেছে। আমাকে যখন প্রয়োজন হবে তখনই আমি ভারত যাব।’
ডরিন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা জানেন এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার কতটা জনপ্রিয়। আপনারাও জানেন তিনি কালীগঞ্জের মানুষের কত প্রিয় নেতা ছিলেন। কালীগঞ্জবাসী এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চায়।’
বিচার দাবিতে মানববন্ধন
এমপি আনারের হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে কালীগঞ্জ মেইন বাসস্ট্যান্ডে ৫ নম্বর ওয়ার্ডবাসীর আয়োজনে গতকাল বিকেলে মানববন্ধন করা হয়েছে। মানববন্ধনে আনারকন্যা ডরিন বলেন, ‘কেন আমার বাবাকে কেটে টুকরা টুকরা করা হয়েছে? আমার কলিজা ছিঁড়ে যায়। আমি ভাবতে পারছি না আমার বাবা নেই। আমি আমার বাবাকে ছুঁয়ে দেখতে চাই। যারা আমার বাবাকে হত্যা করেছে তারা সবাই কসাই। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে।’
খুনের মূল পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান শাহীনের ভাই কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র শহীদুজ্জামান সেলিমকে ধরতে বলেন ডরিন। তিনি বলেন, ‘আপনারা তার ভাইকে জিজ্ঞেস করেন, তার ভাই শাহীন কেন এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটাল। এর বিচার না হলে খুনিরা পার পেয়ে যাবে।’
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওহিদুজ্জামান ওদু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান মিঠু মালিথা প্রমুখ।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.