গলাচিপা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণকাজ প্রায় এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। কাজ হয়েছে মাত্র ২০ শতাংশ। এক বছর ধরে কাজ বন্ধ থাকলেও জানে না সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে যেটুকু কাজ হয়েছে, তা নিয়েও আছে নানা অভিযোগ।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয়ে গলাচিপার মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরু হয়।
জানা গেছে, প্রতিটি জেলা ও উপজেলা শহরে একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করছে সরকার। এর মধ্যে বি ক্যাটাগরিতে সারাদেশে উপজেলা সদরে নির্মাণ করা হচ্ছে ৪৭৫টি। গলাচিপায় তৈরি হচ্ছে এ মডেল মসজিদ। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্তাবধানে এসব মসজিদ পরিচালিত হবে।
সরেজমিন প্রকল্প এলাকা ঘুরে জানা গেছে, প্রথম কয়েকদিন কাজের গতি দেখা গেলেও দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ আছে নির্মাণকাজ। প্রকল্প এলাকার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে ইট, বালু ও পাথর। লোহায় পড়েছে মরিচা। প্রকল্প এলাকায় গত কয়েক মাস ঘুরেও দেখা মেলেনি প্রকল্প সংশ্নিষ্ট কোনো কর্মকর্তার। এমনকি দেখা মেলেনি কোনো নির্মাণ শ্রমিকেরও। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মূল ভবনের এক তলার কাজ সম্পন্ন হয়নি। যেটুকু কাজ হয়েছে, তাও পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। অথচ কাজ বন্ধের বিষয়ে কিছুই জানে না গণপূর্ত বিভাগ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মসজিদ নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের পাথর। দীর্ঘ ১ বছরে মাত্র ২০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জাফর বিল্ডার্স লিমিটেড। কাজের বিষয়ে প্রকল্প সংশ্নিষ্ট ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জাফর বিল্ডার্স লিমিটেড দিচ্ছে না কোনো সঠিক তথ্য। এ নিয়ে নাগরিক সমাজে রয়েছে ক্ষোভ।
গলাচিপার স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ মাসুদ মিয়া বলেন, সারাদেশে প্রধানমন্ত্রী ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করছে, সেটা খুব ভালো খবর। কিন্তু সরকারের এই ভালো কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে কিছু অর্থলোভী ঠিকাদার। কাজের শুরুতেই নিম্নমানের পাথর ও বালু ব্যবহার করেছে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় লোহায় মরিচার আবরণ পড়ে আছে।ঠিকাদার আমজাদ হোসেন বলেন, এ প্রকল্পে ফান্ড সংকট, তাই এতদিন কাজ বন্ধ ছিল। খুব তাড়াতাড়ি আবার কাজ শুরু করব। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়ে প্রশ্ন করায় তিনি কোনো জবাব দেননি।
পটুয়াখালী জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মোঃ মাহবুবুল আলম বলেন, এই কাজের দায়িত্ব আমাদের নয়। কিন্তু উদ্বোধনী ফলকে লেখা আছে এ কাজের বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর ও ইসলামি ফাউন্ডেশন- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি ভালো বলতে পারবে গণপূর্ত অধিদপ্তর।
পটুয়াখালী জেলা গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার ছিল প্রথম ৫০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা, যা ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেছেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে ছিল ৫০টি, সেখানে গলাচিপা নাম নেই। চতুর্থ পর্যায়ে আরও একশটি মসজিদ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্মাণ হবে, সেখানে গলাচিপা নাম থাকবে।
গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ জহিরুল ইসলাম মিরাজ বলেন, আমরা কিছুদিন আগে সাইড পরিদর্শন করে আসছি। করোনার কারণে সরকারিভাবে ফান্ড নেই, তাই কাজ বন্ধ থাকতে পারে। তিনি আরও বলেন, আমি ঠিকাদারকে বলব অল্প কিছু লোক লাগিয়ে যেন কাজ চলমান রাখেন।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts sent to your email.