পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় পোষা পাখি বাজিগর বা বাজরিগার। যারা শখের বসে পাখি পালন করেন তাদের কাছে খুবই পরিচিত একটি পাখি বাজরিগার। শুধু শখ করে নয়; এখন বাণিজ্যিক ভাবেও বাংলাদেশে এটি খুবই জনপ্রিয়। সঠিক পরামর্শ ও সঠিক বিধি মত বাজিগর পাখি পোষে বেকারত্বকে বিদায় সালাম দেওয়া মোটামুটি সোজা-সাপটা ব্যাপার।
পাখি প্রেমিদের কাছে বাজরিগার একটি অতি জনপ্রিয় পাখি। বাজরিগার নাম ছাড়াও এই পাখি প্যারাকিট, বাজী বা শেল প্যারাকিট, ক্যানারী প্যারট, জেব্রা প্যারট, কিম্বা বদরী ইত্যাদি নামেও পৃথিবীব্যাপী বহুল পরিচিত।
বাজরিগার পাখিকে অস্ট্রিয়ান পাখি বলা হয়। অস্টেলীয়ার পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল অঞ্চলসহ সমগ্র বনাঞ্চলে এদের বেশি দেখা যায়। এছাড়াও তাস্মেমিয়া এবং এর প্রতিবেশী কয়েকটি দেশেও এদের দেখা যায় বলে ধারণা পাওয়া যায়।
বাজরিগার প্রাকৃতিকভাবে সবুজ ও হলুদের সঙ্গে কালো রংয়ের হয়। এছাড়াও থাকে নীল, সাদা, হলুদ রংয়ের ছোপ। সারা গায়ে পেটের নিচে আকাশি, হলুদ বা অন্য রংয়েরও হয়ে থাকে।
জানা যায়- এই পাখির উপর গবেষণা চালিয়ে অস্ট্রেলিয়ার অধিবাসীগণ প্রতিপালন শুরু করে সফলতা পায়। জানতে পারেন ঘনঘন ব্রিডিং সম্ভব এই পাখির। একবার যদি বাচ্চা দেওয়া শুরু করে তো আর থামেই না।
দেখতেও টিয়ার মতো। টিয়ে প্রজাতির ছোট এই পাখিটি বিভিন্ন রংয়ের হয়। সারাদিন ক্যাচক্যাচ শব্দে মাতিয়ে রাখে। একটু যত্ন নিলেই শখের বাজরিগার থেকেও করা যায় বাড়তি আয়।
কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন পাখি পালনকারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়- এই জাতের পাখি পোষার জন্য খুব বেশি জায়গার প্রয়োজন হয় না। শুধু দরকার সঠিক পরিচর্যা। মাত্র ১০ ফুট দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতার একটি ঘরে প্রায় ১০০ জোড়া বাজরিগার পাখি পোষা যায়।সকল খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করা যায় খুব সহজেই। বাজরিগার প্রতি ৩ মাস পরপর ৬ থেকে ৮টি বাচ্চা ডিম থেকে ফোটায়।
এক জোড়া পাখি থেকে কিশোরগঞ্জের জেলখানা মোড়ের শাহ আলমের এখন ৮০ জোড়া পাখি।সখের বসে দোকানের এক কোণে বাজিগর পোষেন শাহ আলম (৩৫)। তিনি জানান,বাজরিগার পাখির বয়স যখন ৮ মাস হবে, তখন থেকেই ডিম দেওয়া শুরু করবে। অর্থাৎ পাখি কিনে এনে খাঁচায় পালনের বয়স যখন ৪ মাস হবে তখন ১০০ জোড়া পাখি থেকে গড়ে প্রায় ৩০০ জোড়া বাচ্চা পাওয়া সম্ভব।